আফরা —— আম্মুউউউউউউউউউউউউ,,,,,কই তুমিইইইই
আফরার মা —— কি হলোটা কি,,,,,আমায় এতো জোরে জোরে ডাকছিস কেনো?
আফরা —— কি হলো মানে,,,,এতো লেট হয়ে গেছে এখনো ডাকোনি কেনো আমায়।তুমি জানো না আমি আজকে ভার্সিটিতে যাবো।
আফরার মা —— কিই,,,,,তোকে আমি ডাকিনি।তোকে সেই সকাল থেকে ডাকতে ডাকতে আমার মুখ ব্যথা হয়ে গেলো আর তুই বলছিস আমি তোকে ডাকিনি,,,,
আফরা —— আম্মু,,,,আমার একদম সময় নেই।আমাকে তাড়াতাড়ি রেডি হতে হবে।না হলে ইম্পরট্যান্ট একটা ক্লাস মিস হয়ে যাবে।আবার আজকে নাকি নতুন স্যার আসবে ক্লাস নিতে।তাই আজকে আমাকে যেতেই হবে।
তারপর আফরা ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যাই।কোনমতে তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে নিচে নামতে গেলে আফরার মা বলে,,,,
আফরার মা —— কিছু খেয়েতো যা।
আফরা —— নাহ,,,,ক্যান্টিনে খেয়ে নিবো এখন সময় নেই।
আফরার মা —— আচ্ছা, ঠিক আছে।আজকে কিন্তু কারো সাথে একদম দুষ্টুমি করবি না।কেমন?
আফরা —— আম্মু,,,আমি খুব ভালো মেয়ে তুমি জানো না।
আফরার মা —— হ্যা,,,,,আমি খুব ভালো করেই জানি।তাই সাবধান করে দিচ্ছি।যদি তোর নামে কিছু শুনছি তাহলে তোর বাবাও আজকে তোকে বাঁচাতে পারবে না,,,,,
আফরা —— ওকে,,,,,,দেখা যাবে।
এটা বলে দৌড়ে গাড়িতে গিয়ে বসে পড়ে।এবার আফরার পরিচয় দিই ।পুরো নাম আফরা চৌধুরী এবার অনার্স সেকেন্ড ইয়ার এ পরতেছে।আফরার বাবা আসাদ চৌধুরী। মা জাবিন চৌধুরী।আফরা বাবা মায়ের একমাত্র আদরের মেয়ে।আফরা খুব দুষ্টু।কিন্তু আবার অনেক ভালো ও।আফরা ভিষন মজা করতে পচ্ছন্দ করে।আজকে কলেজে নাকি নতুন ইংলিশ টিচার আসবে।তাই তাড়াতাড়ি যাওয়া। আফরা দৌড়ে ভার্সিটিতে ঢুকার সময় কারো সাথে জোরে ধাক্কা খেয়ে ধপাস করে পড়ে যাই।
আফরা —— কেরে,,,তুই,,,,আমারে ধাক্কা দিলি।এই আফরাকে ধাক্কা দিলি।তোর সাহস তো কম না।
আফরা উঠে দাঁড়িয়ে হাত ঝাড়ছে আর উপরে তাকিয়ে দেখে একটা ছেলের সাথে ধাক্কা খেয়েছে।
ছেলেটা —— এক্সকিউজমি,,,,আমি আপনাকে ধাক্কা দেইনি।বরং আপনি আমাকে ধাক্কা দিয়েছেন।(চোখ রাঙিয়ে)
আফরা —— কিইইইইই,,,,আমি তোরে ধাক্কা দিছি।(রাগি চোখে)
ছেলেটা —— হ্যা। অবশ্যই আপনি দিয়েছেন।আর তুই তোকারি করে কথা বলছেন কেনো?এটা কোন ধরনের ভদ্রতা,,, হ্যা।
আফরা —— একশোবার বলমু,হাজারবার বলমু।তোর কি,,,,তুই একটা সজারু,বিলাই,উজবুক ,,,,,
ছেলেটা —— কিহহহ,,,,আমি উজবুক, সজারু,,,,আপনার সাহস হয় কি করে আমাকে এগুলা বলার,,,,(রেগে)
আফরা —— আমার সাহসের দেখছেনটা কি হ্যা।আমার অনেক সাহস।আর কে আপনি? যে আমার সাথে এভাবে কথা বলছেন।আপনি জানেন আমি কে?
ছেলেটা —— দেখুন,,,,,আপনি কে আমি জানি না।আর জানতে চাইওনা।আপনার মতো এরকম অসভ্য মেয়ের সাথে কথা বলতে আমার কোন ইচ্ছাই নেই।আর আমি কে তা নাহয় আপনি পরেই জানবেন।
এটা বলে ছেলেটা হনহন করে চলে যায়।আফরা দাড়িঁয়ে বিরবির করে বলছে ,,,কতোবড় সাহস,,,,,আমাকে অসভ্য মেয়ে বলল।দাড়া এর শোধ আমি নিমুই।আমার সাথে কেউ এভাবে কথা বলে নাই।দূর,,,,,ওর সাথে এখন ঝগড়া করতে গেলে আমার দেড়ি হয়ে যাবে।এমনিতেই আমার কতো দেড়ি হয়ে গেছে।ওকেতো আমি পড়ে দেখে নিবো।এটা বলে আফরাও ছেলেটাকে একশোটা বকা দিতে দিতে ক্লাসে ঢুকে নিরার পাশে বসে।তখন নিরা বলে,,,,
নিরা —— কিরে তোর মুখটা এমন লাগছে কেনো?কি হইছে বলতো।
আফরা —— কি আর হবে।ভার্সিটিতে ঢুকার সময় একটা বজ্জাতের সাথে ধাক্কা খাইয়া আমি পইরা গেছি।বজ্জাতটা কতো জোরে ধাক্কা দিলো আমারে,,,,,উফঃ কি ব্যথা পাইছি আমি।
তারপর আফরা নিরাকে ছেলেটা আর নিজের সব কথাই বললো
নিরা —— সত্যি লোকটা তোরে ধাক্কা দিছে নাকি তুই লোকটারে ধাক্কা দিছিস।
আফরা —— আমি ধাক্কা দিতে যাবো কেনো?ওই লোকটাই আমারে ধাক্কা দিছে।
নিরা —— তোরে আমি সেই ছোটকাল থেকে চিনি।তুই কেমন তা আমি খুব ভালো করেই জানি।তোর কি মনে হয় আমি তোর কথা বিশ্বাস করবো।তুই খুব ভালো করেই নিজের দোষ অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে পারিস।আর এটা আমি খুব ভালো করেই জানি।
আফরা —— তুই না আমার বান্ধুবি।তুই আমারে এই কথা বলতে পারলি।
নিরা —— তোরে আমার বিশ্বাস হয় না।আর তাছাড়া ধাক্কাটা হয়তো অনিচ্ছাকৃত ভাবে লেগে গেছে।তার জন্য তুই লোকটারে এইভাবে বকা দিবি।
আফরা —— তোর দেখি লোকটার জন্য দরদ উতলাইয়া উঠতাছে।
নিরা —— দূর,,,,,তা না।
আফরা —— তাহলে কি বল?
নিরা —— তোর মাথা।আচ্ছা,,,,,নতুন যে ইংলিশ স্যার আসছে সে নাকি খুব রাগী।
আফরা —— রাগী তো কি হইছে।আমি ভয় পাই নাকি,,,,
নিরা —— নারে সত্যি আমার অনেক ভয় লাগছে।তোরতো সমস্যা নাই।তুইতো ভালো স্টুডেন্ট। সব পারছ।আমিতো কিছুই পারি না।কিছু জিজ্ঞাসা করলেও তো পারবো না।
আফরা —— এখনি এতো চিন্তা করছিস কেনো তুই?পরেরটা পরে দেখা যাবে।আর তাছাড়া আমি আছি না।
নিরা —— আচ্ছা,,,,,স্যারটা ছেলে হবে নাকি বুড়া হবে?
আফরা —— আমি কেমনে কমু।কেনরে তা যাইনা তোর কি লাভ।
নিরা —— আছে আছে।লাভ আছে।প্রেম ট্রেম করলে ও করতে পারি।
আফরা —— বাহ,,,,,ভালো তো।তুই প্রেম করবি,,,,,,হুহুহু,,,,
নিরা —— তুই হাসলি কেন?
আফরা —— তোর দ্বারা প্রেম সম্ভব না।
নিরা ——
আফরা —— স্যারটা যেহেতু রাগি তাইলে নিশ্চয় বুড়া হবে।
নিরা —— তাহলে কি এবারো আমার প্রেমটা হবে না।
আফরা —— তুই বসে বসে ভাবতে থাক,,,,,,আমি একটু পড়ি।
তারপর আফরা বইটা খুলে একটু পড়ছিলো।কিছুক্ষন পর নিরা আফরাকে হাত দিয়ে খোঁচাচ্ছে দেখে আফরা রেগে নিরাকে বলে,,,,,
আফরা —— ওই এইভাবে খোঁচাচ্ছিস কেন?কি হইছেটাকি?দেখছিস না আমি পড়ছি।
নিরা —— স্যার আসছে।দাড়া।
আফরা —— ওহ্,,,,
এটা বলে আফরা উঠে দাঁড়িয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে ওই ছেলেটা।আফরা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি।ভাবতে পারছে না।এইটা তাদের নতুন ইংলিশ টিচার।মনে মনে বলছে ,,,ওরে আল্লাহ্রে এবারতো আমারে মাইরাই ফেলবো এই স্যার।সবাই বসে পড়ছে।কিন্তু আফরা তা খেয়াল না করে হা করে তাকিয়েই আছি।স্যারটা আফরার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।মনে মনে ভাবছে এবার তোমাকে মজা দেখাবো।আফরা ভাবছে ,,,কেনো যে এর সাথে ঝগড়া করতে গেছিলাম।আল্লাহ গো,,,,,,,
নিরা —— কিরে এভাবে স্যারের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?সবাই দেখছে।বস,,,,
নিরার ডাকে আফরার হুশ আসলে আফরা ঠাস করে বসে পড়ে।
নিরা —— কিরে কি হইছে এমন করে আছিস কেনো?
আফরা —— আরে এইটাতো ওই ছেলেটা।
নিরা —— কোন ছেলেটা?
আফরা —— আরে ওই ছেলেটা,,,যার সাথে আমার আজকে সকালে ধাক্কা লাগলো।
নিরা —— কিহ্,,,,,
আফরা —— হুম,,,,,
নিরা —— এবার তুই শেষ মিষ্টি।
আফরা —— ওই তুই আমারে ভয় দেখাচ্ছিস কেনো হ্যা।
নিরা —— তুই না ভয় পাশ না।
আফরা —— হ্যা,,,,,,পাই না তো ভয়।আমি কি বলছি আমি ভয় পাচ্ছি।
চলবে ……………………………….