অফিসের বস যখন রোমান্টিক বউ পর্ব-০১


.
ওয়াশরুমে টানা একঘন্টা পানীর দিকে তাকিয়ে বসে আছি,,,,,, শালা এতো শীতে কিভাবে তোরে আমি ঢালবো পানী,,,,,

গালে হাত দিয়ে ভাবছি শুধু আর পানীর দিকে তাকিয়ে,,,,,,,

আমি: এ ভাই তোর এতোটুকু মায়া হয় না, ওরে পানী তুই দেহ পাবি কিন্তু আমার মন পাবি না রে,,,,,,

ওদিকে আবার আম্মু কিচেনে থেকে ডাক দিচ্ছে….
আম্মু: নাঈমমমমমমম,,,,,,

আমি ওয়াশরুম থেকেই,,,,,,
আমি: জ্বি জ্বি জ্বি আম্মু,,,,,,
আম্মু: বলছি গোসল করলি নাকি এখনো পানীর দিকে তাকিয়ে বসে আছি জলদি কর।
— হ্যাঁ হ্যাঁ এই তো আম্মু এই করে নিচ্ছি।

শালা কিভাবে না বলবো আজ পাক্কা সাতটা দিন গোসল করিনি শুধু বডিস্প্রে দিয়ে কাটিয়ে দিয়েছি,,,,,, তাতে কি? চল ভাই নাঈম আজও বডিস্প্রের সাহারা নিয়ে পানীকে টাটা বাই বাই বলে দে,,,,,,,
আমি এবার পানীকে টাটা বলে দিয়ে মাথায় একটু পানী মেখে নিলাম নয়তো আম্মু বুঝতে পেরে যাবে আর তাতে আমার ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাবে,,,,,,,

আমি এবার রুমে পৌছাতেই….
আম্মু: নাঈম তোর আজ ইন্টারভিউ জলদি কর বাবা কখন যাবি?

__শালা পড়াশোনা শেষ হতে না হয়েই জব খুজা শুরু,,,,,,,
ভেবেছিলাম স্টাডি শেষ করে একটু ফ্রেন্ডদের সাথে চিল করবো, কিন্তু না আমরা তো ছেলে আমাদের তো মাথায় উপরে দায়িত্ব এটা আমার গুণধর আব্বু বলেছে,,,,,,,

আমি: আম্মু ছেলের রোজগার করা টাকা কি এখনি বাসায় আনা দরকার, কোথায় একটু বলবা নাঈম যা একটা দুটো প্রেম কর তারপর বিয়ে কর হানিমুনে যা একটু । একটু বেশি করে হ্যান্ডমানি দিবা তা না করে ছেলেকে জবের জন্য পাঠিয়ে দিচ্ছো।

_ভাইরে ভাই সাথে সাথে শের এর আওয়াজ, শালা যেখানেই ভয় সেখানেই সন্ধা হয়। আরে আমার বাসার শের হচ্ছে আমার আব্বু।
আব্বু: হ্যাঁ তোমায় তো মুন্র হানিমুনে পাঠাবো, কুলাঙ্গার কোথায় একটা, দুপয়সা রোজগার নেই আবার এদিকে স্বপ্ন দেখো ছেলে আমার হানিমুনে বিয়ে করবে, বলি খাওয়াবি কি রে বৌকে (রেগে রেগে)

_আচ্ছা পাঠকভাইয়ারা আপনারাই বলেন আমার কি কিছু স্বপ্ন থাকতে পারে না। শালা কেউ বুঝলোই না আজ পর্যন্ত,,,,,,,,

আমি এবার ড্রেস পড়ে সারা শরীরে বডিস্প্রে লাগিয়ে ড্রয়িং রুমে গেলাম, দেখি আমার বাসার শের বসে আছে আর ওদিকে আম্মু কিচেন থেকে….
আম্মু: বস টেবিলে খেয়ে যাবি।

আমি এবার আব্বুর সামনে বসতেই….
আব্বু: উহহহহহ হতরছাড়া আজও গোসল করেনি, সারা শরীরে বডিস্প্রে মেরে বের হয়েছে।
__এই রে আব্বু তাহলে বুঝতেই পেরে গেলো, শালা ইজ্জতের ফালুদা হয়ে গেলো মাইরি,,,,,,,,

আব্বু: এই শুনছো নাঈমের আম্মু, তোমার ছেলেকে গোসল করতে বলবা নাহলে কিন্তু আমি বাসা থেকে ওকে লাথি মেরে বের করে দেবো বলেই দিচ্ছি (রেগে রেগে)

আমি: আমায় যে বের করে দিবা তাহলে এই সম্পত্তিগুলো কার নামে লেখবে শুনি? তুমি কি চাও না তোমার নাতি নাতনিদের কোলে নিতে(আব্বুর দিকে তাকিয়ে আমি হাসতে হাসতে)

আব্বু আরো রেগে গিয়ে…..
আব্বু: এই তোর লজ্জা করে না এসব বলতে, এখনো বাপের টাকায় গিলছিস আবার বলছি সম্পত্তি চাই, খাওয়াচ্ছি এটাই অনেক (প্রচুর রেগে রেগে)
আমি: জ্বি জ্বি জ্বি আব্বু, আর সম্পত্তিটাও দিয়ে দিলে ভালো হয়।

আব্বু আরো রেগে কন্ট্রোল না করতে পেরে,,,,,,
আব্বু: এই নাঈমের আম্মু একে থামাও নাহলে আমি বাসা থেকে সারাজীবনের মতো চলে যাবো থাকবা তোমরা মা বেটাতে,,,,,,
আম্মু এবার হাসতে হাসতে কিচেন থেকে বেরিয়ে…..
আম্মু: আহহহ নাঈম কি হচ্ছে চুপ কর।
আমি আবারো হেসে আব্বুর দিকে তাকিয়ে….
আমি: বেশ চলে যাবে ভালো কথা, কিন্তু কিছু টাকা দিয়ে যেও বুঝতেই পারছো বাজারের জিনিসপত্র শাক-সব্জি আনতে হবে তাই না,,,,,,,

আব্বু পুরো রেগে আগুন…..
আব্বু: নাঈমের আম্মু আমি কিন্তু এবার ওকে জুতার বাড়ি দেব (রেগে রেগে)

আমি সাথে সাথে পাঁচটা আঙুল দেখিয়ে,,,,,,
আমি: একটা জুতার বাড়িতে পাঁচটা টাকা, যটা মারবা ঠিক করে টাকা দিবে কিন্তু আমি জানি তুমি খুব পাকা হিসাবি,,,,,,,
আম্মু এবার রেগে গিয়ে আমার মাথায় একটা থাপ্পড় মেরে….
আম্মু: এই চুপ কর,,,,,,
আমি এবার চুপ করে খাবার খেতে লাগলাম।
খাবার শেষ করে আম্মুর আঁচলে হাত মুখ মুছতে যাবো….
আব্বু: এই গামছায় হাত মুছে আয়,,,,,,,
….
আমি: বাব্বাহ তোমার বৌ বলে কি তুমিই হাত মুছতে পারবা নাকি আমারো আম্মু আমিও মুছতে পারি ওকে, চুপ থাকো (হাল্কা হেসে)
আব্বু: এই নাঈমের আম্মু এই ছেলেটা দিন দিন যতো বড়ো হচ্ছে ততো ফাজলামী করা শুরু করছে, সব তোমার জন্য,,,,,,
আম্মু: আমি আবার কি করলাম? আমি গেলাম তোমাদের বাপ বেটার মাঝে আমি নেই,,,,,,
এটা বলেই আম্মু কিচেনে চলে গেলো,,,,,,

আমি এবার আব্বুর দিকে তাকিয়ে….
আমি: আব্বু আজ তো আমার ইন্টার্ভিউ…
আব্বু: জ্বি জ্বি দোওয়া লাগবে তো, করে দিলাম বাবা ভালো করে দিস
(শালা কিপটা মাইরি, জানে টাকা লাগবে আমার, তাই কথাটা পালটে দেওয়ার চেষ্টা, বাট আমি পিচ্চি পন্ডিত, আমিও আমার আব্বুর রক্ত)
__আমিও জানি বাপের কাছে কিভাবে টাকা নিতে হয়,,,,,,,
আমি হাল্কা নরম সুরে…
আমি: আব্বু আমার টাকা লাগবে মানে ভাড়া(হাল্কা নরম সুরে)
আব্বু: টাকা মানে কোনো কাজ করিস নাকি যে তোকে টাকা লাগবে।
আমি: কাজ করি তো।
আব্বু: কি কাজ করিস তুই?
আমি: প্রতিদিন সকালে একবার করে খবরের কাগজ পড়ি।
আব্বু: ওটা আবার আজ হল নাকি?
আমি: যাহ বাব্বাহ তুমিই তো সেদিন বললা যে খবরের কাগজ পড়া অনেক ভালো কাজ। তো কাজ হলো না এটা। দাও এবার টাকা লেট হচ্ছি তো।

__আব্বু আমার মুখের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে, ভাবছে হয়তো শালা কি হারামি আমার ছেলেটা, বাপকেও বোকা বানিয়ে দিচ্ছে,,,,,,,,

_আমি এবার আব্বুর বুক পকেটে হাত ভরে একটা পাঁচশো টাকার নোট নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম আমার আব্বুর টাকায় কেনা বাইক নিয়ে।
আসার আগে আব্বু চিৎকার করে….
আব্বু: আজ যদি না জব কনফার্ম করে নিয়ে না আসতে পারিস আজ থেকে তোর এই বাসায় ভাত বন্ধ,,,,,,

_রাস্তায় যাচ্ছি আহা কি সুখ, শালা সুখ না ছাই, হাত গুলো যেন বরফে জমে যাচ্ছে। কি ঠান্ডা লাগতাছেরে,
নাহ আমায় দেখছি চা আর সিগারেটের স্মরনার্থী হতেই হবে,,,,,,,

তাই আমি একটা চায়ের দোকানের কাছে দাঁড়ালাম। দোকান থেকে চা আর সিগারেট নিলাম এক হাতে চায়ের কাপ আর এক হাতে সিগারেট,,,,,,,,,,
___
কিছুক্ষন পর দেখলাম রাস্তার ওপাশে একটা গাড়ি দাঁড়ালো আমি কেয়ার না করে চা সিগারেটের মজা নিচ্ছি দেখলাম, গাড়ি থেকে একটা মেয়ে বের হলো গাড়ির পিছনে এলো এবং চাকার দিকে তাকিয়ে কি যেন দেখছে, মুখটা চুলের জন্য জন্য দেখতে পাচ্ছি না। এবার উঠে দাঁড়াতেই আমার গলায় চা আটকে গেলো, চোখগুলো বড়ো বড়ো হয়ে গেলো, শালা কি মেয়েরে, ওফফ নীল শাড়িতে নীল চুড়ি কালো চুল, আমার মনের মধ্যে ঘন্টা বেজে গেল,,,,,,,,,

__মেয়েটার সামনে আমাকে যেভাবে হোক যেতে হবে, এটা মেয়ে নাকি অস্পরা শালা ঠোঁটে লিপস্টিক, মনটা এখন বলছে আম্মু তোমার বৌমা খুজে পেয়েছি,,,,,,,

_কিন্তু যাবো কিভাবে? শালা কোনো আইডিয়ার মাথায় আসছে না, একটা আইডিয়া অবশ্য এলো যদি আমি বাইক নিয়ে মেয়েটার গাড়ির পিছনে মারি তবে মেয়েটার সাথে কথা বলার সুযোগ পাবো একটু হলেও,,,,,,,

_তারপরেই মনে পড়লো আমার বাসার শেরের কথা,যদি বাইকের কিছু হয় আমায় মেরে তক্তা বানিয়ে ফেলবে,,,,,,

__তবুও চিন্তা করে দেখলাম নাঈম বাইক হারালে বাইক পাওয়া যায় রে, কিন্তু এরকম মেয়ে হারিয়ে গেলে আর পাবি না রে,,,,,,

__যাইহোক আমি আর চিন্তা না করে ইউ ট্রার্ন মেরে মেয়েটার গাড়িতে এসে মারতেই আমার বাইক নিয়ে পড়ে গেলাম মেয়েটা তুলার জায়গায় দেখি আমার দিকে কড়া লুক দিয়ে তাকিয়ে….

মেয়েটা: এই কানা নাকি, দেখতে পান না চোখে,,,,,,
আমি এবার অনেক কষ্টে উঠে…..
আমি: সরি সরি আমি দেখতে পাইনি।
মেয়েটা এবার মাথায় হাত দিয়ে….
মেয়েটা: স্ক্রু ঢিলা নাকি,,,,,,

__আমি কোনো কথা না বলে মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি, মুখটা গোল পুরাই গোলুমুলু, গালে একটা ভাজ মানে টোল, ঠোঁটে কমলা রঙের লিপস্টিক কানে ঝুমকা।
আমি নিজের অজান্তেই….
আমি: ওই মেয়ে ওর চুল সরিয়ে ওই ঝুমকা দুলিয়ে খোঁপায় বেলি ফুল গুঁজে দিতে চাই,,,,,

_আমি মেয়েটার থেকে চোখ সরাতে পারছিনা,মাশাল্লাহ, মেয়েটা এবার চিৎকার করে……
মেয়েটা: ওহ হ্যালো,কি যা তা বলছেন মিস্টার (হালকা রেগে গিয়ে)

আমি হাল্কা হেসে আবার রেগেও, নয়তো বুঝে যেতে পারে আমি ইচ্ছা করেই ধাক্কা মেরেছি,,,,,,,,,
আমি: ওই হ্যালো মানে কি হ্যাঁ, রাস্তার মাঝে গাড়ি রেখেছেন আবার আমার দিকে আঙুল তুলছেন (আমিও হালকা রেগে গিয়ে বললাম)
মেয়েটা: আঙুল তুলবো না কি করবো আপনাকে গুড় দিয়ে চাটবো,,,,,,
আমি: তাহলে তো বেশ ভালোই হয়, গুড়ের দাম কিন্তু আমি দিতে পারবো না আমার কাছে এখন টাকা নেই, আপনি বরং দিয়ে রাখেন পরে আমি দিয়ে দেবো না হয় (হাল্কা হেসে)

ভাইরে মেয়েটা রেগে আগুন হয়ে গেলো আমার এই কথাটা শুনে…
মেয়েটা: এই কুত্তার বাচ্ছা (রেগে রেগে)
কুত্তার বাচ্ছা বলতেই আমি রেগে গেলাম…..
আমি: এই শ্যাওড়া গাছের পেত্নি,,,,,,
মেয়েটা: এই পেত্নি মানে,যা তা বলবি না,,,,,
আমি: তুই পেত্নিকে হার মানাবি তুই তো ডাইনি, দজ্জালের শাশুড়ি আম্মা।

_সাথে সাথে মেয়েটির যা করল তা দেখে আমি পুরাই অবাক,,,,,,,,,

————–চলবে না দৌড়াবে————–

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *