আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে!! (এটা বলার সাথে সাথে তানজিলা হঠাৎ করে আমার গালে একটা কিস দিয়ে এক দৌড়ে বাসার ভিতরে চলে গেল আমি ওর কান্ড দেখে একদম রোবট এর মত দাড়িয়ে আছি, মনে হয় আমার শরিরের ব্যাটারি লো মারছে,, তার কিছুক্ষন পর cng তে এসে বসলাম তারপর cng তার আপন গতিতে আমার বাসার উদ্দেশ্যে চলতে লাগলো আর আমি cng এর মধ্যে বসে ভাবতে লাগলাম,, তানজিলা আমার সাথে এমন করলো কেন গালে কিস দিলো কেন?)
কিছুক্ষন পর cng বাসার সামনে এসে দাড়ালো, আমার তো ঐ দিকে কোন খেয়াল নেই,, আমি তানজিলার এসব কর্ম কান্ড নিয়ে ভাবছি, হঠাৎ cng ড্রাইবারে ডাকে আমার ঘোর কাটলো,,)
CNG ড্রাইবারঃ হুজুর আমরা এসে গেছি,,
আমিঃ জ্বী কি বলছেন??
CNG ড্রাইবারঃ আমরা এসে গেছি,,
আমিঃ ও আচ্ছা সরি চোখে একটু ঘুম এসে গেছিলো তাই খেয়াল করি নি,(বলে CNG ড্রাইবারের পাওনা দিয়ে বাসার দরজায় গিয়ে বেল দিবো আর ভাবতেছি আজ আমার খবর আছে এত রাত করে বাসায় আসার ফল ভোগ করতে হবে ভাবতেছি আর বেল বাজাইতেছি)
তারপর যে দরজা খুললো তাকে তো দেখে আমি ৪০০ ভোল্ডের শক খাইছি সামনে তাকিয়ে দেখি ভাইয়া দাড়িয়ে,,,
আমিঃ ভাইয়া তুমি? কখন আসলে?? (অবাক হয়ে)
ভাইয়াঃ এইতো কিছুক্ষন আগে, ( আসলে ভাইয়া ঢাকার একটি মাদ্রাসায় চাকরি করে আর ভাইয়া আসার কোন কথাই ছিলো না তাই এত বড় শক খেলাম,,)
আমিঃ ভাবি কোথায়? আর আমার আম্মু টা?
ভাইয়াঃ ওরা আম্মুর কাছে আছে ওখানে গল্প করতেছে,!
ভাইয়ার কথাটা শুনেই এক দৌড়ে আম্মুর রুমে চলে গেলাম কিন্তু আজ যে দেড়ি করে বাসায় ফিরার জন্য আম্মুর কাছে বকা শুনতে হবে তার কোন খেয়ালই নেই গিয়ে দেখি ভাবি আম্মুর সাথে গল্প করে আর আমার ছোট আম্মুটা, আম্মুর কোলে বসে বসে দুষ্টামি করে,, আমি রুমে ডুকা মাত্রই মাহিদা,(আমার ভাতিজী)
মাহিদাঃ দেখ দেখ আম্মু ইমন আসছে,, (বলে এক দৌড়ে আমার কোলে এসে দাড়ি টানা টানি শুরু করলো,, আর বলতে লাগলো)
মাহিদাঃ ইমন আমার চত্তেল দেও ( একদম চকলেট পাগলি ওর বয়স মাত্র তিন বছর ঠিক মত কথা বলতে পারে না,, তারপরে পাকা বুড়ি আমার নাম ধরে ডাকে)
আমিঃ সরি আম্মু চাচ্চু তো জানে না তুমি আসবে তাই আনতে পারি নি তুমি একটু অপেক্ষা কর আমি নিয়ে আসতেছি,, (মাহিদার সাথে দুষ্টামি করার কারনে ভাবির কথা ভুলেই গেছি তখন পাশে থেকে ভাবি বললো)
ভাবিঃ কি খবর দেবর জী?? ভাতিজী কে পেয়ে তো আমাকে একদম ভুলেই গেছো!!
আমিঃ আসলে সরি ভাবি বুড়ি টাকে পেয়ে তোমার কথা ভুলে গেছি!
ভাবিঃ হুম ভুলবেই তো কারন বুড়িটাই তো তোমার সব!!
আমিঃ আচ্ছা ভাবি বাদ দেও তো, কেমন আছো বলো??
ভাবিঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো, তুমি কেমন আছো??
আমিঃ এই তো ভালো!! হঠাৎ না জানিয়ে আসলে যে??
ভাবিঃ কই না জানিয়ে আসলাম?? আম্মু আব্বু কে তো বলছি ই!
আমিঃ তো আমাকে বললো না যে তোমরা আসবে?
ভাবিঃ আমি আম্মুকে না বলছি তোমাকে বলতে কারন তোমাকে সারপ্রাইজ দিব বলে!!
আমিঃ ওরে আল্লাহ সবাই এতো সারপ্রাইজ দেয় কেন আমাকে? (বিড়বিড় করে)
ভাবিঃ কিছু কি বললে??
আমিঃ কই না তো! আচ্ছা বলো তোমাদের আসতে কোন সমস্যা হয় নি তো??
ভাবিঃ না আল্লাহর রহমতে কোন সমস্যা হয় নি,
তারপর ওখানে আম্মু ভাবি আর মাহিদার সাথে কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে দোকানে চলে গেলাম, মাহিদার জন্য চকলেট আনতে, তারপর চকলেট নিয়ে এসে দেখি বুড়িটা আম্মুর কোলে ঘুমিয়ে আছে তাই কি আর করার চকলেট গুলো নিয়ে রুমে চলে আসলাম কারন আমি জানি বুড়িটা ঘুম থেকে উঠে যদি আমার কাছে চকলেট না পায় তখন আর আমার দাড়ি একটাও থাকবে না। তারপর আমরাও খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম, তারপর ফজরের আজানে ঘুম ভাঙলো ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়তে চলে গেলাম নামাজ পড়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা না দিয়ে বাসায় চলে আসলাম, কারন শরিল টা একটু খারাপ লাগছে তাই বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়লাম, কিছুক্ষন পর বুড়িটার চিল্লাচিল্লিতে ঘুম ভেঙ্গে গেল চোখ খুলে দেখি বুড়িটা আমার বুকের উপর বসে চিল্লাচ্ছে!
মাহিদাঃ ইমন চাচ্চু ইমন চাচ্চু আমার চত্তেল দেও!
আমিঃ(একটু মজা করে) কিসের চত্তেল আম্মু?
মাহিদাঃ তেন, তুমি রাতলে বলছো না চত্তেল দিবে? দেও তালাতালি দেও,,(আরেব্বাস বুড়িটা তো আচ্ছা পাকা এখনি এমন না জানি বড় হলে কেমন হয়)
আমিঃ সরি আম্মু চাচ্চু চত্তেল আনতে পারি নি,, (মিথ্যে বললাম বুড়ি টিকে রাগানোর জন্য কিন্তু ভাই বলে শেষ না করতেই আমার দাড়ি টানা শুরু ব্যাথায় দিলাম এক চিৎকার তারপর তারাতারি ওর হাতে চকলেট দিলাম কারন একটু দেড়ি হলেই খুর কেচি ছাড়াই শেফ হয়ে যেতাম, এরি মধ্যে বুড়টার চিল্লাচিল্লিতে ভাবি আর আম্মু আমার রুমে এসে দেখে বুড়ি টা আমার বুকের উপর বসে বসে চকলেট খায়)
ভাবিঃ বাহ দুই চাচা ভাতিজী সকাল সকাল চিল্লা চিল্লি শুরু করছো কেন?
আমিঃ আরে বলো না তোমার এই দর্জাল মেয়ে সকাল সকাল আমাকে একটু ঘুমাতে না দিয়ে চকলেট দেওয়ার জন্য চিল্লা চিল্লি শুরু করে দিছে, আর আমি চকলেট নেই বলার কারনে আমার দাড়ি একটিও রাখে নি,,
ভাবিঃ এই তুমি আমার মেয়েকে দর্জাল বলবে না বলে দিলাম!
আমিঃ তো কি বলবো শুনি সকাল সকাল যে ভাবে আমার দাড়ি ছিড়ছে তো কি বলবো শুনি,, একদম তোমার মত হইছে!! দর্জাল একটা!”
ভাবিঃ এই কি বললে আমি দর্জাল, হুম ( বলেই বালিশ দিয়ে মারছে আমার গায়ে আমিও মারছি এ ভাবে অনেক্ষন বালিশ মারামারি করার পর আম্মু এই তোরা থামবি? বৌ মা তোমরা কি পাগলামি শুরু করছো হ্যা!! তারপর ভাবি আম্মুকে জরিয়ে ধরে!)
ভাবিঃ দেখ আম্মু আমাকে তোমার ছেলে দর্জাল বলে, আম্মু আমি কি দর্জাল?
আম্মুঃ আরে না তুমি দর্জাল কে বলছে? এই বান্দর এর কথায় রাগ করো না এই বান্দর আমার বৌমাকে দর্জাল বলবি না বলে দিলাম, যদি বলিস তো তোর খবর আছে,, (আম্মু আমাকে বললো)
আমিঃ এ্যাএএএএ দর্জাল কে দর্জাল বলবো না তো কি বলবো শুনি?
ভাবিঃ এই কুত্তা তোমার বৌ দর্জাল আমি না।
আমিঃ জ্বী না আমার বৌ দর্জাল না, আমার বউ হল একটা কিউট শান্ত সুন্দরী তোমার মত এমন পেত্নী আর দর্জাল না তুমি যেমন দর্জাল তোমার মেয়েও দর্জাল!!
ভাবিঃ কি আমি পেত্নী,দর্জাল?? দাড়াও (বলেই আমার কান টা ধরে টানতে লাগলো,)
আমিঃ ভাবি ছাড়ো ছাড়ো লাগছে তো, ছাড়ো প্লিজ!
ভাবিঃ না ছাড়বো না, আগে বলো আমি কি পেত্নী দর্জাল?? (রেগে)
আমিঃ আরে না তুমি তো হলে একদম নুনের মত সুন্দর,, (হি হি হি মজা করে)
ভাবিঃ আবার কি বললে আমি নুনের মত সুন্দর??
আমিঃ আরে চেত ক্যা আমি বলতে চাইছি নুন যেমন সাধা তুমি ও তেমন সাধা,, তবে নুনের মত নুন কাটা (বিড় বিড় করে)
ভাবিঃ ঐ বিড় বিড় করে কি বলছো?
আমিঃ কই কিছু না তো! তোমার প্রশংসা করছি,, হি হি হি!! ( আপনারা ভাবছেন আমি ভাবির সাথে এভাবে দুষ্টামি করছি কেন? আসলে ভাবির কাছে আমি ওর ছোট একটা ভাই ওর কোন ভাই নেই তো তাই আর কি আমাকে ভাই মনে করে সব সময় তবে বলে দেবর জী করে)
এরি মধ্যে বড় আপু আর দুলাভাই এসে হাজির
আপুঃ এই এখনে কি হচ্ছে রে?? (আমাদের কে দেখে হেসে হেসে জিজ্ঞাস করলো,, )
ভাবিঃ দেখ না আপু তোমার ভাইটা আমাকে পেত্নী আর দর্জাল বলে, ( ভাবি আপু কে জরিয়ে ধরে)
আপুঃ এই কুত্তা তুই ওকে কি বললি??
আমিঃ আরে আপু কিছু না মজা করলাম আর কি তো বলো তুমি কেমন আছ? আর আহমদ কই?? ( আহমদ হল আপুর ছেলে একমাত্র বাদর ছেলে ঠিক আমার মত হি হি হি)
আপুঃ এই তো ভালো আর আহমদ ওর নানুর কাছে।
আমিঃ আমি ও আচ্ছা!” ওকে নিয়ে এসো!
পাশের থেকে দুলাভাই বললো
দুলাভাইঃ কি খবর শালা বাবু, কখন থেকে এসে দাড়িয়ে আছি একটু কথাও তো বলো নি,,
আমিঃ সরি ভাইয়া আপুর সাথে কথা বলছি তো তাই,,
দুলাভাইঃ তো শালা বাবু ভাবির কি অবস্তা?? (সয়তানি হাসি দিয়ে)
আমিঃ কোন ভাবি??
দুলাভাইঃ আরে ন্যাকামি করতে হবে না আগামি ১৫ তারিখ তো তোমার বিয়ে!! (আমি যাহ বাবা ওদের সাথে দুষ্টামি করতে করতে ওটাই ভুলে গেছি আর এর সাথেই তানজিলার কথাও মনে পড়ে গেল সাথে সাথে দুষ্টামির চেহারাটা কালো হয়ে গেল, তখন ই পাশের থেকে ভাবি বললো,,)
ভাবিঃ আরে ভাইয়া বলো না আমার দেবর জী বিয়ের জন্য লাফালাফি করছে!! ( দিল একটা বাশ)
আমিঃ যাহ বাবা কখন আমি আবার বিয়ের জন্য লাফালাফি করলাম আমি তো এই বিয়েটা করতে চাই না,,
তখন সবাই একসাথেঃ কি কেন করতে চাও না? (একে অপর জনের দিকে তাকিয়ে)
আমিঃ ( যাহ বাবা কি বলে ফেললাম ভেজাল তো একটা বাধিয়ে দিছি ধুর, মনে মনে) না মানে আসলে,
পাশের থেকে আম্মু বললো!
আম্মুঃ ঐ কি মানে মানে করছিস?
আমিঃ না মানে এমনেই,, (তোতলাতে তোতলাতে)
আম্মুঃ আমি জানি কেন তুই এই বিয়েতে রাজি না!! (আম্মু কথায় বুকের ভিতর একটা কামর মারলো,,, তারপর আম্মু যা বললো, তা শুনে আমি তো ডোকের উপর ডোক গিলছি,, এবার আমার অবস্তা শেষ………………
চলবে ?—————–