আমিঃ দেখুন আর মাত্র ১০ দিন পর আপনার বিয়ে তো আপনার স্বামী যদি জানে আপনি অন্য কোন ছেলের সাথে শপিং করতে যান, তাহলে উনি কি মনে করবে শুনি?? আর আমার বাসায় কাজ আছে, আপনি বরং অন্য কাওকে নিয়ে যান।
তানজিলাঃ না উনি কিছু মনে করবে না, আর তোর আজকে কোন কাজ নাই,, তোকে আজ আমার সাথে যেতেই হবে,,
আমিঃ আমি আচ্ছা ঠিক আছে,, যাবো!! ( ভাইয়েরা আপনারা ভাবছেন কেন আমি ওর কথায় রাজি হইছি?? আসলে এই মেয়ে যে পরিমানে রাগি আর গুন্ডি ওকে হাজার বার না বললেও শুনবে না,, তাই আর বেশি কথা বলি নি)
তানজিলাঃ সত্যি???
আমিঃ আপনি যে পরিমানে গুন্ডি আমি হাজার বার আপনাকে না বললেও আপনি মানবেন না তাই আর কি করার যেতেই হবে!! (মিথ্যে হাসি দিয়ে)
তানজিলাঃ ঐ কি বললি আমি গুন্ডি?? (রেগে)
আমিঃ হুম,,
তানজিলাঃ তবে রে তোর খবর আছে আজকে,,,,
আমিঃ আচ্ছা বাদ দিন বলুন কোথায় আসতে হবে??
তানজিলাঃ বিকাল ৫:০০ টায় *জায়গায় আসো,, আমি ওখানে থাকবো!!
আমিঃ আচ্ছা (বলে ফোন টা কেটে দিয়ে ভাবতে লাগলাম, কি থেকে কি হয়ে গেল? কেন আমার সাথে এমন হলো?? আসলে এখন সবাই স্বার্থপর,,, কি দরকার ছিলো আমাকে মিথ্যে ভালোবাসায় জড়ানোর? কি দরকার ছিলো আমাকে মিথ্যে স্বপ্ন দেখানোর?? কি প্রয়োজন ছিলো আমাকে মিথ্যে আসা দেওয়ার,, কোন ভুলের জন্য এতো বড় শাস্তি আমি পাচ্ছি,, ভাবতেছি হঠাৎ দরজায় নক করার আওয়াজে আমার ভাবানার সমাপ্তি হল,, তখন খেয়াল করলাম,, চোখ গুলে ফুলে একদম আলু হয়ে গেছে,, আর অঝর দ্বারায় পানি পড়ছে,, তখন তারাতারি নিজেকে সামলে নিয়ে,, দরজার দিকে গিয়ে দরজা খুলে দিলাম,, দেখলাম আম্মু হাতে এক গ্লাস দুধ নিয়ে দাড়িয়ে আছে,, আমি আম্মুর দিকে তাকাতেই দেখি আম্মু আমার দিকে চোখ বড় করে তাকিয়ে আছে!!)
আম্মুঃ কিরে বাবা তুই কাদছিস কেন??
আমিঃ আরে না আম্মু,, কি বলছো এসব কই কাদছি?? ( মিথ্যে হাসি দিয়ে যদি ও হাসতে অনেক কষ্ট হইছে)
আম্মুঃ মিথ্যে বলবি না আমি দেখতেছি তুই কাদছিস,, তোর চোখ ফোলা!!
আমিঃ আরে আম্মু কিছু না,, চোখে কি যেন পড়ছে,, তাই চোখ মুছতে মুছতে হয়তো এমন হইছে! ( আম্মুকে বললাম না যে আম্মু তোমার ছেলে সত্যি কাদছে,, কারন আম্মু কষ্ট পাবে, আর আমি আম্মুকে কষ্ট দিতে চাই না!)
আম্মুঃ আচ্ছা,, তাহলে এই দুধ টা খেয়ে নে,,(মাথায় হাত দিয়ে,, আসলে পৃথিবীতে সবাই স্বার্থপর হলেও একমাত্র মা স্বার্থপর না)
আমিঃ আচ্ছা তুমি এখানে রেখে যাও,, আমি পরে খেয়ে নিবো,, ( কারন এখন আর আমার কিছু খাওয়ার চাহিদা নেই)
আম্মুঃ না তুই এখন খাবি আমার সামনে,, আমি জানি রেখে গেলে তুই খাবি না,(রাগ দেখিয়ে,, মায়ের রাগ গুলো আদরের মিষ্টি হয়)
আমিঃ (কি আর করবো বলুন,, মায়ের সাথে তো আর পেরে উঠবো না,, তাই বাধ্য হয়ে খেয়ে নিলাম,)
তারপর আম্মু গ্লাস টি নিয়ে চলে গেলেন, আর আমি শুয়ে পড়লাম,, আর ভাবতে লাগলাম,, না আমাকে শক্ত হতে হবে এভাবে আর চলবে না,, আমি আর ওকে নিয়ে ভাববো না,, কিন্তু হারামি মন টাও অবাধ্য হয়ে গেছে কিছুতেই বুঝে না,, এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেলাম মনে নেই,,
ঐ দিকে
তানজিলা আর মেঘলা কলেজে চলে গেল,, কলেজ গেট দিয়ে ডুকতে যাবে,, তখন ই,,
একটি ছেলেঃ এই যে খালাম্মা,, (মনে হয় মঝা করে)
তানজিলাঃ হে ভাগিনা বলো!! (তানজিলার কথা শুনেতো মেঘলা খিলখিল করে হেসে দিল!!!)
তানজিলাঃ এই শাকচুন্নী হাসিস কেন? (মেঘলাকে একটি গুতা দিয়ে,, বিড়বিড় করে বললো)
মেঘলাঃ আচ্ছা সরি আর হাসবো না, (হাতের ইশারায় বললো)
তানজিলাঃ তো বলো কি বলবে? (ছেলেটি কে)
ছেলেটিঃ না কিছু না, এমনেই ডাকছি,, (তানজিলার কথায় নাকা বোকা হয়ে)
তানজিলাঃ না বাবা বলো,, কেও কি কোন মেয়েকে শুধু শুধু ডাকে?? (মেঘলা ওর ফাইজলামি দেখে মুখে হাত দিয়ে হাসতেছে)
ছেলেটিঃ কিছু না, এমনেই মজা করে ডাকছি!!
তানজিলাঃ এই আমি কি তোর বউ লাগি নাকি তুই আমার সাথে মজা করতে আসছিস?? (একদম গুন্ডি ভাব নিয়ে) ছেলেটি তো ওর এমন রাগ দেখে একদম চুপসে গিয়ে,,
ছেলেটিঃ সরি আপু ভুল করে ফেলেছি,, আর কখনো এমন হবে না!!
তানজিলাঃ ok যা তবে আর কোন দিন যদি দেখি এমন করতে আসিস,, তাহলে তোর পা ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে দিব,, কথাটা মনে রাখিস!”
ছেলেটিঃ আচ্ছা আপু আর এমন হবে না,,(বলে দ্রুত ওখান থেকে চলে গেল,, তারপর)
মেঘলাঃ কিরে ছেলেটির সাথে এমন করলি কেন??
তানজিলাঃ তো কেমন করবো শুনি??
মেঘলাঃ এই রাগিস কেন?? আমিতো তোকে এমনেই জিজ্ঞাস করছি,,
তানজিলাঃ আচ্ছা,, এই শুন না ছেলেটি কে আচ্ছা রকম নাকাবোকা বানাইছি!!
মেঘলাঃ হুম তা তো তুই পারবিই,, কারন তুই যে পরিমানে গুন্ডি,, জানি না তোর বর তোকে কেমনে সামলায়!! (হেসে হেসে)
তানজিলাঃ এই শাকচুন্নী কি বললি? আমি গুন্ডি?? আজ তোকে খাইছি (বলেই উত্তম মোদ্ধোম মেঘলার পিঠে)
মেঘলাঃ এই এই ব্যাথা পাচ্ছি প্লিজ ক্ষমা করে দে,, আর কখনো বলবো না!
তানজিলাঃ মনে থাকে যেন?? (মেঘলা কে ছেড়ে দিয়ে)
মেঘলাঃ ok মনে থাকবে, এখন ক্লাসে চল!
তানজিলাঃ ok চল, (বলে ওরা ক্লাসে চলে গেল,)
এই দিকে জোহরের নামাজের সময় আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙলো!!
আম্মুঃ কিরে বাবা এখনো ঘুমাবি? উঠ জোহরের আজান দিছে নামাজে যা,,
আমিঃ আচ্ছা আম্মু যাচ্ছি,,( বলে উঠে গোসল করতে চলে গেলাম,, গোসল করে অজু করে নামাজ পড়তে মসজিদে চলে গেলাম,,নামাজ পড়ে আসমানের দিকে হাত উঠিয়ে আল্লাহকে বলতে লাগলাম,,)
আমিঃ হে আল্লাহ, তুমি আমায় কোন পরিক্ষায় পেলেছো? কি দোষ ছিল আমার যে জন্য আমাকে এত বড় শাস্তি দিচ্ছো?? কেন তুমি আমার কাছ থেকে তানজিলাকে ফিরিয়ে নিচ্ছো? কেন আমায় তার প্রেমে আসক্ত করছো?? কেন আমার স্বপ্ন গুলো ভেঙ্গে দিলে? হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে একটি ফরিয়াদ করছি তুমি আমার কাছ থেকে তানজিলাকে কেরে নিয়ো না,, তুমি আমায় আর কঠিন পরিক্ষায় ফেলো না,, এভাবে অনেক্ষন মুনাজাত করে বাসায় চলে আসলাম,, বাসায় এসে সোজা রুমে গিয়ে ভাবলাম একটু ফেসবুকে যাই, হয়তো ওখানে গেলে তানজিলাকে একটু ভুলে থাকতে পারবো,, যে ভাবা সেই কাজ,, ফেসবুকে লগইন করা মাত্রই সেই রুপুসি রাজকন্না আইডি থেকে মেসেজ!
অপর পাশ থেকেঃ আসসালামু আলাইকুম!!
আমিঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম!!
অপর পাশ থেকেঃ তো মিষ্টার এখন তো আর ফেসবুকে দেখি না কেন??
আমিঃ ভালো লাগে না তাই!!
অপর পাশ থেকেঃ সত্যি কি ভালো লাগে না,, নাকি অন্য কিছু??
আমিঃ অন্য কিছু মানে??
(তারপর ও যা বললো তা শুনে আমার চোখ কপালে উঠে গেল,, এই মেয়ে এটা জানলো কি ভাবে??)
অপর পাশ থেকেঃ তুমি যে তানজিলার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে তাই যে তুমি ফেসবুকে আসো না এটা আমি জানি,,,
আমিঃ এই এই আপনি এটা জানলেন কি ভাবে??
অপর পাশ থেকেঃ বারে আমার স্বামী কার সাথে কোথায় যায়,, কখন কি করে,, এগুলা কি আমি জানবো না??
আমিঃ এই আপনি কে বলুন তো,, আর আপনি কি করে এত কিছু জানেন??
অপর পাশ থেকেঃ বললাম তো সময় হলে আমি কে সেটা জেনে যাবে, আর আমি এত কিছু কিভাবে জানি,,এটা না হয় রহস্যই থাক!!
আমিঃ আসলে আপনি নিজেই একটা রহস্য!!
অপর পাশ থেকেঃ হি হি হি সবাই বলে!! আর তোমাকে একটা কথা বলবো,,
(তারপর ও আমাকে যা বললো, তা শুনে আমার চোখ কপালে উঠে গেল, আমি আগে থেকেই ভাবছি এমন টাই হবে…………………………
সামনে চলবে কি??—————–