বাইরে বের হলাম আর লাবন্য মেমকে খুজতে লাগলাম৷কিন্তু কোথাও খূজে পাচ্ছি না৷গেল কোথায়৷
আর তখনই কেউ একজন বলে উঠল..
-লাবন্য মেমকে খূজতেছেন?(অফিসের একজন)
–হুম ,ওনি কোথায়?(আমি)
–আসলে ওনি একটু আগেই অফিস থেকে বের হয়ে গেছেন৷
–কোথায় গেছে?কিছু বলে গেছে?
–না৷
ঠিক তখনই পিছন থেকে ম্যানাজার সাহেব বলে উঠলেন..
–আপনি একটূ দাড়ান৷মেডামকে এখনই ফোন দিচ্ছি
–হুম ৷একটু লাউড স্পিকার দিয়ে কথা বলবেন!
–হুম
তারপর ওনি ফোন দিলেন৷ফোন বাজতেছে কিন্তু ফোন রিসিভ করছেনা৷অনেকক্ষন রিং হবার পর ফোন রিসিভ করল৷আর ফোন ধরার পরই ওনি বলা শুরু করলেন৷
–হ্যালো মেম ,আপনি কোথায়?
–আমি কোথায় সেটা জেনে লাভ নেই,ওই মূর্খের বাচ্ছা কি অঘটন ঘটিয়েছে?তাই বলো(অনেক রেগে)
–মেডাম সত্যিই অনেক বড় অঘটন ঘটিয়ে ফেলছে,যা বিশ্বাস করার মত না
—ওই হারামির বাচ্ছাকে তো আমি মেরেই ফেলব,আমি এখনই আসছি,কিন্তু ওর জন্য কোন পার্টীর কাছ থেকে আমাদের অপমানিত হতে হইছে?
–সে কি মেম.অপমানিত হব কে…..
তখনই ওনার মূখে হাত দিয়ে ধরলাম৷আর আস্তে আস্তে বললাম,মেমকে এখন বলবেন না,ওনাকে আগে আসতে দেন,বড় ধরনের একটা সারপ্রাইজ পাবে৷
ওনি তখন মাথা নাড়াল৷আর অন্যদিকে
-ওই ম্যানাজার,বয়রা হয়ে গেছিস নাকি?কথা বলছিস না কেন!
(চিৎকার দিয়ে)
–আসলে মেডাম,ও অফিসে যা যা করছে,তা আপনি নিজের চোখেই এসে দেখে যান৷আর তারপর যা খুশি তাই করবেন৷
–হুম,আমি আসছি,মাত্র ২০মিনিট লাগবে৷আর এই ২০মিনিটই হতে পারে ওই হারামির বাচ্ছার শেষদিন(অনেক রেগে)
তারপরই ফোনটা কেটে দিল৷আর তখনই আমরা খুব তাড়াতাড়ি একটা প্লান করলাম৷আর প্লান অনুযায়ি কাজ করলাম৷অল্প সময়ে যতটূকু পেরেছি ততটুকুই করেছি৷
তারপর অপেক্ষায় রইলাম কখন লাবন্য মেম আসবে৷আর কখন সারপ্রাইজ দিবো?
প্রায় ৩০মিনিট পর লাবন্য মেম আসল৷আর আমি তখন আড়ালেই লুকিয়ে রইলাম৷
আর ওনি এসেই প্রচন্ড রেগে,চিৎকার করে জিজ্ঞাসা করতে লাগল
–ওই আরমানের বাচ্ছা,কই তুই?তোর আজকে জীবনের শেষ দিন৷ওই ম্যানেজার ওই ক্ষ্যাত টা কই(অনেক রেগে )
–আসলে মেডাম,ওনি আমাদের গেষ্ট রুমে বসে বসে হাওয়া খাচ্ছে৷
–কিহহহহহ ওই ছোটলোক,রাস্তার ছেলে আমাদের গেষ্ট রুমে যাবার সাহস হলো কিভাবে৷আবার হাওয়া খাচ্ছে৷খাওয়াচ্ছি তোকে জীবনের শেষ হাওয়া৷আর ওকে তো আজ মেরেই ফেলব…
বলেই লাবন্য মেম গেষ্ট রুমের দিকে দৌড়ে যাওয়া শুরু করল৷আর আমরা প্লান মত পিছন পিছন যাওয়া শুরু করলাম৷
ওখানে যেতেই দেখল৷রুমের বাতি বন্ধ,পূরো রুম অন্ধকার৷লাইটের সুইচ ও অন্ধকারে খুজে পাচ্ছে না৷৷লাবন্য ভিতরে গিয়েই আবারও চিৎকার করে বলছে৷
“””ওই রাস্তার,ছেলে,কই তুই,রুম অন্ধকার করে রেখেছিস কেন৷
ঠিক তখই সুইচটা দিয়ে দিলাম৷আর সবাই হাতে করে ফুল ছিটাতে লাগল৷আর তখনই লাবন্য বলে উঠল
–ম্যানেজার সাহেব,,কি হচ্ছে এগূলো?কাটা গায়ে নূনের ছিটা?(রেগে চিৎকার করে)
–আসলে মেডাম,আমরা সমস্ত পার্টিদের কাছ থেকে অর্ডারটা পেয়ে গেছি,তাই দিনটাকে উদযাপন করব ভাবছি(ম্যানেজার)
–ওই,ম্যানেজার?মসকরা করছিস আমার সাথে?ওই খেতের সাথে তোকেও কিন্তূ….
–আমাকে কি মেডাম?মারবেন?
আর বিশ্বাস না হবারই কথা৷আজ যে কান্ড ঘটেছে,তা তো কেউ বিশ্বাস করবে না৷একটা মূর্খ ছেলে,প্রেজেন্টেশনে যা করেছে….
–কি বলতে চাচ্ছেন?
–এই দেখুন!
বলেই সব পার্টির চুক্তির স্বাক্ষরিত ফাইলটা লাবন্যের সামনে তূলে ধরল৷আর ওর চোখ যেন ভিতর থেকে বের হয়ে যাচ্ছে,ইয়া বড় বড় হয়ে গেল৷
–কিভাবে পসিবল এটা(লাবন্য)
–সবই সম্ভব হয়েছে ওই আরমানের জন্য(লাবন্যর বাবার আগমন)
–কি বলছো বাবা?আরমান এগূলো করেছে?ও কিভাবে এটা করবে?তোমরা কি মজা করছো?(লাবন্য)
–মা রে,এটাই সত্যি রে আরমান যে প্রজেক্ট তৈরি করেছে ,সেটা সব কোম্পানির অনেক ভালো লেগেছে৷আর সবার সামনে ওর প্রেজেন্টেশন করাটা আরও অনেক ভালো হইছে
-কিন্তু বাবা,ও কিভাবে করল এটা?
–কিভাবে করেছে,সেটা বলতে পারিনা৷তবে আজ কোম্পানির সম্মানসহ নতুন করে কোম্পানিকে ও এগিয়ে নিয়ে গেছে৷
–বাবা,আরমান কোথায়?বাবাকে ওকে একটু ডাকো ?প্লিজ বাবা
–আরমান,এবার তো সামনে আসো(লাবন্যর বাবা)
আর তখনই আমি লাবন্যর সামনে উপস্থিত হলাম৷আমাকে দেখে লাবন্য অনেক লজ্জা পেল৷ওর মুখটা একদম লজ্জায় লাল হয়ে গেল৷
আর কেন জানি তখন ওর মূখটা আমার হেব্বি ভাল লাগছে৷এক অজানা মায়া কাজ করতে লাগল৷
আমি এক নাগাড়েই ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম৷আর তখনই ওর ডাকে ঘোর ফিরল৷
–এই যে শুনছো?চুপ কেন?(লাবন্য)
লাবন্য হঠাৎ আমাকে তুমি বলায়,সংকোচে পড়ে গেলাম৷আর একটা জিনিস বুঝতে পারলাম, আজ ওর স্বার্থ লাভের কারনেই তুই থেকে তুমি হলাম৷এটাই বাস্তবতা
–কি হলো চুপ কেন?(লাবন্য)}.
–জ্বি মেডাম,বলুন(আমি).
–আসলে কিভাবে যে বলব?কি ভাবে যে শুরু করব?
–সমস্যা নাই,আপনার যেভাবে খুশি শুরু করতে পারেন৷ইচ্ছা করলে বাপ তূলে মুর্খের বাচ্ছা বলেও শুরু করতে পারেন,ইচ্ছা হলে মারতেও পারেন
–প্লিজ আরমান এভাবে আমাকে এখন আর লজ্জা দিও না ,যা কিছু হয়েছে তার জন্য সত্যিই আমি অনেক লজ্জিত,আসলে আজকে তুমি যদি সব কিছু ঠিকঠাক না করতে৷তাহলে সত্যিই আমাদের কোম্পানির অনেক বড় বিজনেস লস হয়ে যেত,আর আমাদের অনেক অপমানিতও হতে হত
–মেম,যা হয়ে গেছে সব ভুলে যান৷
–আচ্ছা তুমি এতকিছু করলে কিভাবে?আর ইংরেজিতে এত কিছু উপস্থাপনা করলে কিভাবে?তুমি না পড়ালেখা করোনি?
–সবকিছুর জন্য পড়ালেখা লাগে না
–হুম৷কিন্তু তুমি যা করেছো পড়ালেখা ছাড়া একদমই পসিবল না৷আর আমি লন্ডন থেকে ডিগ্রি নীয়ে এসেও তো সেটা করতে পারিনি৷আর তুমি……..
–মেম,কচ্ছপ আর খরগোশের গল্পটা নিশ্চয় শুনেছেন৷হয়ত আজ তেমনই একটা ঘটনা ঘটে গেল৷আর যাই হোক,এই দিনটা উদযাপন করুন আজ
–আজকের দিনটা সত্যিই উদযাপন করার মত
৷কিন্তু তোমার সবকিছুই রহস্যজনক
–কি বললেন মেম?
–কই নাতো ৷কিছুনা৷
তখনই লাবন্যর বাবা বলে উঠল
–লাবন্য,তুই আরমান সহ,সকলকে নিয়ে বাসায় আয়,আজকে পার্টী হবে৷আর সবার সামনে একটা প্রস্তাব ঘোসনা করতে চাই৷
–কি প্রস্তাব বাবা?(লাবন্য)
–হুম কি প্রস্তাব আংকেল(আমি)
–ওই তোমাকে না বলছি,অফিসে আংকেল বলবানা,বস বলবা৷বুঝেছো?(লাবন্য)
–আরে বাদ দে রে মা৷আংকেল বললেও প্রবলেম নাই(লাবন্যর বাবা)
–হুম৷তবে অফিসে বস বলেই ডাকব৷আর বাসায় আংকেল বলেই ডাকব৷ হি হি হি(আমি)
–বাবা,বলো না কি প্রস্তাব?(লাবন্য)
–আমি আবারও তোর সহকারি হিসাবে আরমানকে নিয়োগ করতে চাই,যদি তোর প্রবলেম না থাকে(লাবন্যর বাবা)
–কিন্তু বস,লাবন্য মেম কি…….(আমি)
–বাবা,আমার কোনো আপত্তি নেই৷আমি রাজি(লাবন্য)
(মনে মনে বলতে লাগলাম,বাপরে একটা কাজ করে এত দুর পর্যন্ত এগিয়ে গেছি?)
–তাহলে আজ থেকেই আরমান তোর সহকারি হিসাবে কাজ করবে৷আর ওর বেতন হবে ২০হাজার(লাবন্যর বাবা)
—ওরে বাবারে?২০হাজাররররররররররর?(বলেই মাথা ঘুরিয়ে ফ্লোরে পড়ে গেলাম৷
কিছুক্ষন পর চোখ খুলতেই৷২০ এর কথা আবার মনে হয়ে গেল৷আর আমি আবারও অজ্ঞান হয়ে গেলাম৷😦
তারপর চোখে পানি দিয়ে আবারও চোখ খোলার ব্যবস্থা করল৷আমি তো তখন আর দাড়াতেই পারছিনা৷বলে কি?সামান্য এক কাজ করেই এত টাকার বেতনে কাজ?
আর তখনই লাবন্য আমার হাতে হাত রাখল৷আর আস্তে আস্তে টেনে তুলতে লাগল৷এই প্রথম লাবন্যর এত মায়ারসিক্ত হাতে আমার হাত ধরতেই ৷বুকটা কেমন জানি ধুক করে উঠল৷আর মনের ভিতর কেমন জানি শিহরন জেগে উঠল৷মনে হচ্ছে ফিল্মের নায়িকা পড়ে গেলে যেমন করে নায়ক,নায়িকার হাতে ধরে উপরে তোলে ঠিক তেমন করে লাবন্য আমাকে তুলছে৷
–এই,উঠে পরছো তো?এখনও হাত ধরে রাখবে?হাত ছাড়ো?
–ওপসসস ৷সরি মেম,আসলে কখন যে উঠে দাড়িয়ে গিয়েছি বুঝতেই পারিনি
–ইটস ওকে৷চলো এবার বাসায় যাই৷
আহঃ শালার কি স্বার্থবাজি রে৷আজ স্বার্থ উদ্ধার করার ফলে কত মধুর ভাষা৷
যাই হোক রাগের চেয়ে ভাল লাগাটাই সব চেয়ে বেশি৷ কারন লাবন্য আমার সাথে ভালো ব্যবহার করছে৷আর কোম্পানির সম্মানও রাখতে পেরেছি৷যতটুকু পারি,নিজের সর্বস্ত দিয়ে হলেও কোম্পানির সম্মান অক্ষুন্ন রাখতে সবসময় চেষ্টা করব৷
–এই আরমান, আরে এই আরমান! কি হইছে তোমার(কানের সামনে এসে চিৎকার দিয়ে)
–ওমা রে!এত জোড়ে কানের সামনে কেউ এমনভাবে চিল্লানি দেয় নাকি?(লাফিয়ে উঠে বলল)
–তো কি করব?সেই কখন থেকেই ডাকছি তো ডাকছি!কিন্তু তুমি তো একদম পাথরের মত হয়ে হেসেই চলেছো,যেন কোনো কিছুই শুনছো না৷তাই তো এমন করলাম৷
–তারমানে তুমি আমারে এতক্ষন ডাকছিলে?কিন্তু আমি কিছু শুনিনি কেন?তো কেন ডাকছো?
–আরে হাদারাম৷বাবা কি বলেছে মনে আছে?
–কি বলেছে?
–এত সহজেই সব ভূলে গেলে?আরে বাসায় আজ পার্টী হবে৷তাড়াতাড়ি চলো৷
–ওপসস ভুলেই তো গেছি,আসলে এমন সুন্দরির ছোয়া পেলে….(ভিরভির করে)
–কি বললে?
–কই কিছু না তো৷তো এবার যাওয়া যাক!
তারপরই আমরা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম৷আর মুহূর্তেই মনে হতে লাগল লাবন্যর আগের ব্যবহার এর কথা৷আর নিজের অবস্থান৷ক্ষনিকের মুহূর্তেই নিজেকে নিয়ে এত কিছু করা ঠিক নয়৷তাই আবার ওর থেকে নিজেকে দুরে রাখার চেষ্টা করতে শুরু করলাম৷লাবন্য গাড়ির সামনে গিয়েই আমাকে বলল..
–তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠো!
-আমি টেক্সি করেই চলে যাবো৷আপনি চলে যান৷
–টেক্সি করে যাবে মানে কি?
–মানে কিছুই না৷অফিস টাইম অব্দি আমি আপনার সহকারি৷আর এরপর আপনার উপহাসের পাত্র৷যাই হোক আপনি চলে যান৷আমি চলে যেতে পারব৷
মূহূর্তেই লাবন্যর হাসিমূখ মলিন হয়ে গেল৷আমিও আমার মত করে চলে গেলাম৷বাসায় যাবার পরই দেখলাম লাবন্য চূপ করে বসে আছে৷আর বাসায়ও সবাই মিলে অনেক মজা করছে আর৷লাবন্য মন মরা হয়ে বসে আছে৷যাই হোক আমি আমার মত ভিতরে গেলাম৷আমাকে দেখেই লাবন্যর বাবা সামনে আসল৷আর আমাকে বলল
–বাবা আরমান,লাবন্যর সাথে কি তোমার কিছু হয়েছে?(লাবন্যর বাবা)
–না তো৷কিন্তু কেন আংকেল?(আমি)
–আসলে ওর মনটা অনেক খারাপ৷তাই বলছিলাম৷আর তুমি একটু দেখো তো কি হইছে৷
–আমি???
–হুম৷যাও বাবা
তারপর আমি লাবন্যর কাছে গেলাম৷আর গিয়েই বললাম
–কি হইছে মেম?মন খারাপ?(আমি)
–(চুপ)
-কি হলো মেম?চুপ কেন?
–আরমান,প্লীজ তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও
–আরে এটা আপনি কি বলছেন মেম?
–আমি যা বলছি সত্যি কথাই বলছি?আজ তোমার জন্যই আমাদের কোম্পানি…..
–দেখেন,এই কথার ফয়সালা অনেক আগেই হয়ে গেছে,তো নতুন করে বলে লজ্জা দিবেন না
–আমি লজ্জা দিচ্ছি না৷প্লীজ আরমান আমাকে মাফ করে দাও
-দেখেন মাফ করার কিছুই নেই৷আর আমাদের এই ক্ষমতাও নেই যে আপনাদের মত মানুষকে মাফ করব
–আরমান,আমি সত্যিই অনেক ভূল করেছি৷আসলে আমি মান মর্যাদা নিয়ৈ অনেক অহংকারি ছিলাম৷আর সব শেষ হয়ে গেছে৷লন্ডন থেকে ডিগ্রি পাবার পর আমি আরও অহংকারি হয়ে গিয়েছিলাম৷আর আমি এত শিক্ষিত হয়েও যা করতে পারিনি৷আর তুমি লেখাপড়া না করেও তার চেয়ে অনেক বেশি করে ফেলেছো৷
–আরে বাদ দেন মেম৷আমি তো আমার কর্তব্য পালন করেছি মাত্র৷
–তাহলে আমিও আমার কর্তব্য পালন করছি এখন
বলেই লাবন্য একটা অনেক দামি ঘড়ি আমার হাতে পড়িয়ে দিল৷আর একটা আইফোন আমার হাতে ধরিয়ে দিল৷
আর তখনই আমি তা আবার ফেরত দিয়ে দিলাম৷আর তখনই লাবন্যর মূখটা আরও খারাপ হয়ে গেল৷আর হঠাৎ ই পিছন থেকে লাবন্যর বাবা বলে উঠল
-বাবা,তুমি প্লিজ এগূলো নিয়ে নাও,তাহলে লাবন্য অনেক খুশি হবে(লাবন্যর বাবা)
–না আংকেল৷এগূলো আমি কেন
নিবো?
-আজ তোমার কারনে আমরা অনেক বড় বড় অর্ডার পেয়েছি৷তাই তোমাকে এটা পুরষ্কার হিসাবে দিতে চাচ্ছে৷আর বেশ কিছুদিন ধরে একটা জিনিস খেয়াল করে আসছি তোমার তো কোনো ফোনও নেই৷
–হুম ফোন নেই ভালো কথা৷ঘড়িটা আমি নিয়ে নিলাম৷শুধু মাত্র আপনাকে সম্মান করি বলে৷কিন্তু ফোনটা আমি নিতে পারব না৷কারন গরীবদের হাতে এগূলো মানায় না৷
–কি বলছো এগূলো?তুমি এখন তো আর গরিব না৷তুমি আমাদের পরিবারের একজন সদস্য.
-যাই হোক আংকেল৷আমি পূরষ্কার হিসাবে ঘড়িটা নিতে পারব৷আর ফোন নিতে পারব না৷যদি কখনো পারি নিজের বেতনের টাকা দিয়েই ফোন কিনবো৷
তখনই লাবন্য বলে উঠল
–আচ্ছা বাবা,ওকে আর কিছু বলো না৷ঘড়িটা নিলেই চলবে৷আর ওকে তুমি একমাসের টাকা এডভান্সড দিয়ে দাও৷ও ফোন কিনুক(লাবন্য)
–হুম৷আমি এক্ষনি দিয়ে দিচ্ছি(লাবন্যর বাবা)
–কিন্তূ আমি তো এখনও কোনো কাজই করিনি(আমি)
–যখন কাজ করবে ,মনে করো সেখান থেকেই না হয় টাকাটা কেটে রেখে দিবো(লাবন্য)
–হূম(আমি)
তারপরই আমাকে একমাসের বেতনের টাকা অগ্রিম দেওয়া ৷হলো আর সবার সাথে সেদিন রাতটা অনেক আনন্দে উদযাপন করলাম৷তার চেয়ে বেশি উদযাপন করলাম৷টাকাটা পেয়ে৷কারন জীবনের প্রথম রোজগার৷
আমি রুমে ডুকে গেলাম৷আর তখনই চোখ দিয়ে অঝরে পানি বের হতে লাগল৷কারন তখনই বাবা মায়ের কথাটা অনেক বেশি মনে পড়তে লাগল৷আজ তারা আমার পাশে থাকলে কতই না খুশি হতো৷
আমাকে অগ্রিম বেতন ২০হাজার টাকা দিয়েছে৷এই টাকা দিয়ে পরের দিন৷৭হাজার টাকা দিয়ে একটা কমদামি স্মার্ট ফোন কিনলাম৷আর ৮হাজার টাকা আমার বন্ধু রনির নাম্বারে বিকাশ করলাম৷আর তারপরই রনিকে ফোন দিলাম
–দোস্ত কেমন আছিস(আমী)
–ভালো কিন্তু আপনি কে?(ওপাশ)
–আরে হারামি আমি আরমান।
–ন ন আরমান(তোতলানো শুরু করল)
–আরে হারামি এমন শুরু করছিস কেন?
–ভাই তুই কেমন আছিস?কি করছিস?
–বাবা মা,তোদেরকে ছাড়া কেমন আর থাকা যায়?যাই হোক যেটা বলি শুন,বাবা মা কেমন আছেরে?
–বেশি ভালো না রে,তোর বাবাও অনেক অসুস্থ রে,খুব টাকার প্রয়োজন রে৷আর তুইও তো কাছে নেই
–হূম৷আমি কাছে নেই তাতে কি?আর তোরা তো আছিস!আমি তোর নাম্বারে কিছু টাকা পাঠাইছি৷তুই টাকাগূলো তুলে তারপর বাবাকে নিয়ে দিবি৷আর খবরদার একদমই আমার কথা বলবি না কিন্তু..
–কিন্তূ কেন?
–তাহলে আর টাকাটা নাও নিতে পারে৷তোর পায়ে ধরি ভাই আমার কথা তুই বলিস না৷আর আমি যে তোর সাথে কথা বলছি সেটাও বলবি না
–কিন্তু কেন আরমান?
–যেটা বলছি সেটা কর ভাই৷আর বেশি কথা বলতে পারছিনা৷টাকাটা তুই দিয়েছিস বলেই চালিয়ে দিবি৷
বলেই ফোনটা কেটে দিয়েছি৷কারন আরও কিছু কথা বললে হয়ত আমি অনেক ইমোশনাল হয়ে যাবো৷আর বাবার জন্য হয়ত অনেক টাকা দরকার৷তাই এভাবেই চলতে হবে৷আর টাকাও পাঠাতে হবে৷
তারপরই ঘুমিয়ে পরলাম৷
আর ঘুম থেকে উঠে ফোনটা হাতে নিলাম৷
হাতে ফোন পেয়ে তো হেব্বি খুশি৷তারপরই আমার ফেসবুক আইডিতে লগইন করলাম৷প্রায় ৩মাস পর আবার নিজের সেই প্রিয় ফেসবুক আইডিতে ডুকলাম৷ওপস আপনাদের তো বলাই হয়নি৷গ্রামে যখন থাকতাম তখন দুষ্টুমির পাশাপাশি ফেসবুকে একটু আধটু গল্প লিখতাম৷আর গল্পের মাধ্যমে মানুষকে একটু হাসানোর আর আনন্দ দেবার চেষ্টা করতাম৷ আমার গল্পগুলো অনেকেই পড়তো৷কিন্তূ ভালো কোনো ফ্রেন্ড ছিলোনা৷তাই কারও সাথে চ্যাটিং করাও বেশি হতো না৷
যাই হোক ফেসবুকে ডুকতেই আমার চোখ আসমানে উঠে গেল৷কারন কয়েক হাজার মেসেজ এসেছে৷
সবগুলো মেসেজই আস্তে আস্তে দেখতে লাগলাম তারপরেই একটা আয়ডির মেসেজ দেখে অবাক ……….
চলবে………