বোরকাওয়ালি মেয়ে যখন বউ পর্ব-০৩


মেয়েটিকে ডাক দিতেই শালা আমি তো অবাক,,
এতো দেখি কালকের সেই মেয়েটা,, মানে রাস্তায় যার চোখের মায়ায় পড়ে গেছিলাম,,

মেয়েটি সাথে সাথে দাঁড়িয়ে গেল,,
আমি আবার মেয়েটির চোখের মায়ায় পড়ে গেছি,,এক পলক থাকিয়ে আছি,,
মেয়েটি–এই যে মিস্টার এইভাবে থাকাই আছেন কেন,,

মেয়েটির কথাই আমার ঘোর কাটল,,
আমি–ক ক কই (ইস কি লজ্জা,আমি মাথা নিচু করে ফেললাম)
মেয়েটি–আপনি কালকের সেই ছেলেটি না,,?
আমি–না না মানে নে নে,,হ্যা,,
মেয়েটি–আপনি তোতলা নাকি,,?
আমি–আমি তোতলা হতে যাব কেন,,কি সব বলছেন,,
মেয়েটি–তাহলে এইরম করেন কেন,,,,,
আমি–না মানে আসলে আমি কোন মেয়ের সাথে কথা বলি নাই তো তাই,,
আমার না মেয়েদের সাথে কথা বলতে লজ্জা করে,,(লজ্জা মাখা কন্ঠে)
মেয়েটি–আইছে আমার লজ্জাবতী,,
আমি–আমি আপনার হতে যাব কেন,,?
মেয়েটি–চান্দু তুমি তো দেখতেছি খুব দুষ্টু হয়েছ,,তোমার দুষ্টামি বের করছি (মনে মনে)
আমি–বেচে আছেন নাকি,,?
মেয়েটি–তো কোথায় যাব,, আচ্ছা কি জন্য ডাকলেন সেটা বলেন,,? আমার আবার স্কুলে দেরি হয়ে যাচ্ছে,,
আমি–কোন স্কুলে যাবেন,,?
মেয়েটি একটি স্কুলের নাম বলল,,(স্কুলের নাম বল্লাম না আবার আপনারা ওকে দেখতে চলে আসবেন,,ওর কি যে চোখের মায়া,,)
আমি–আমি ও তো ঐ স্কুলে পড়ি,, চলেন একসাথে যাওয়া যাক,,
মেয়েটি–হুম চলেন,,

__দুজনে পাশাপাশি হাটতেছি,, আমার কেমন কেমন জানি লাগতেছে,,
আমি–আচ্ছা আপনাকে তো কোনদিন স্কুলে দেখিনাই,, নতুন নাকি,,?
মেয়েটি–হুম,,
আমি–ওও,,দুর শুধু বকবক করেই যাচ্ছি,, আপনার নামটা তো জানা হলনা,,,
মেয়েটি–আমি নুসরাত,, আপনি,,,?
আমি–নাঈম,,, আপনি কোন ক্লাসে ভর্তি হয়েছেন,,?
মেয়েটি–ক্লাস ১০ এ,,
আমি–আমিও,,,(যাক ভালো হল,,ওর মায়াবি চোখ গুলো প্রতিদিন দেখতে পারব,,)
কথা বলতে বলতে স্কুলে চলে আসলাম,,,
দুজনে একসাথে ক্লাসে প্রবেশ করলাম,,
ওমা দেখি আমার বন্ধুরা ভুত দেখার মত আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,
আমি গিয়ে ওদের পাশে বসলাম,,,
আমি–কিরে হালা এইভাবে থাকাই আছস কেন,,?
রাকিব–তোর সাথে বোরকাওয়ালি টা কে,,?
আমি–কেউ না,,
রাফি–বুঝি বুঝি সব বুঝি,,
আমি–বেশি বুঝিস বলে তো পরিক্ষায় আন্ডা মারস,,
রাফি–দেখ আমার একটা মান সম্মান আছে,,তোই কিন্তু আমাকে অপমান করছিস,,
আমি–রাখ তুর অপমান,, ক্লাসে মন দে,,

তারপর স্যারের কথায় মনোযোগ দিলাম,,,
হঠাৎ মেয়েটির দিকে চোখ পড়তেই দেখি ও আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,, ধুর আমি কি মেয়ে মেয়ে করছি,,ওর নাম তো নুসরাত,,,,

আমি ওর দিকে তাকাতেই ও চোখ ফিরিয়ে নিল,, কিছুই তো মাথায় আসছে না,,
এইভাবে ক্লাস শেষ করে বাইরে বের হয়ে ওর জন্য অপেক্ষা করতে থাকি,,
ও বেরিয়ে এলে
আমি–চলেন যাওয়া যাক,,
নুসরাত–হুম,, চলেন,,
আসার সময় তার সাথে তেমন কথা বলিনি,,

কতদুর আসার পর, নুসরাত দাঁড়িয়ে গেল,,আর ভাবতে লাগল,,এইরে আমি যদি ওর সাথে যাই তাহলে তো ও আমার বাসা ছিনে পেলবে,,আমাকে সন্দেহ করবে,,,,

আমি–কি হল দাঁড়িয়ে গেলেন কেন,,?
নুসরাত–না মানে আমার একটু কাজ আছে,, আপনি চলে যান,,
আমি-ওকে বাই,,,,,

তারপর বাসায় এসে সুজা রুমে চলে গেলাম,, তারপর গোসল করে নিচে খাবার খেতে চলে আসলাম,, খাওয়া শেষ করে রুমে চলে গেলাম,, গিয়ে শুয়ে শুয়ে মেয়েটার কথা ভাবতেছি,,, কেন যানি না ওর প্রতি টান অনুভব করি,,,

__তারপর প্রাইভেট এর টাইম হলে,,বই খাতা নিয়ে যখন বেরিয়ে যাব,,
আম্মু–আসার সময় মিম মামনি কে নিয়ে আসবি,
আমি–আমি পারব না,,এই বলে বেরিয়ে গেলাম,,,,,

_মেডামের বাসার সামনে এসে কলিং বেল বাজানোর সাথে সাথে মেডামের মেয়ে মানে মিম,, দরজা খুলে দিল,,
মিম–কেমন আছো নাঈম,,
আমি–ভালো আপনি,,?
মিম–ভালো,,ওই কুত্তা তুই আমাকে আপনি করে কথা বলতেছস কেন,,?
আমি–কি বেয়াদব মেয়েরে বাবা,, সুন্দর করে কথা কন,,, অপরিচিত দের সাথে কিভাবে কথা বলে জানেন না,,
মিম– নাঈম তোমার কিছু মনে পড়ছে না,,?আমরা একসাথে কত খেলা করেছি,,কত মারামারি করেছি,,

আমি–না,,মনে পড়ছে না,,(ওকে রাগানোর জন্য বললাম)

মিম আর কিছু না বলে চলে গেল,,
ওর চোখের কোনে পানি দেখলাম,,,
আমি কি এমন বললাম যে ওর চোখে পানি,, সেগুলো পরে ভাবা যাবে,,

_আমি সুজা টেবিলে গিয়ে বসলাম,,
মেডাম আসলে পড়া শুরু করলাম,,,
পড়তে পড়তে পেটের ভিতর sumz ভাইয়ের গান শুরু হয়ে গেল,, মানে খিদে লাগছে,,,,,

__কাল প্রথম আসছি বলে নাস্তা দিছিল,,
আজ আর দিচ্ছেনা,, আম্মু তোমার বান্ধবী এত কিপটা কেন (মনে মনে)

পড়া শেষ করে যখনি আসতে যাব,, তখনি
মিম–ওই আমাকে ফেলে চলে যাচ্ছ কেন,,,,,

আমি ওর দিকে তাকাতেই টাস্কি খেয়ে গেলাম, উফফ বলে বুঝাতে পারব না,,,নিল ড্রেস সাথে হিজাব,,,,,

আমি–আপনি কোথায় যাবেন,,?
মিম–তোমার সাথে তোমাদের বাসায়,, তোমার আম্মুকে দেখতে,,সেই কখন দেখেছি,,,,,

মেডাম–ওকে সাথে করে নিয়ে যা,,
আমি–ওকে আসেন,,
মিম তো মহা খুশি,,

তারপর দুজনে বাসার দিকে রওনা দিলাম,,
দুজনে পাশাপাশি হাটতেছি তখন
মিম–আচ্ছা তুমার গফ নেই,,
আমি–এইটা কি আবার?(না জানার ভান করে)
মিম–ওমা যেন ছোট বাচ্চা,,আসো একটা পাপ্পি দি,,
আমি–কি মেয়েরে বাবা লজ্জা সরম কিছু নাই,,
মিম–শুন তোমার থাক বা না থাক আজ থেকে কোন মেয়ের দিকে তাকাবে না,,,
আমি–এএএ বল্লেন হল,,
মিম–একবার তাকিয়ে দেখ,, তখন দেখবি
আমি–কি গুন্ডি মেয়েরে বাবা,,,

কিছুক্ষণ পর বাসায় চলে আসলাম,
কলিং বেল বাজানোর কিছুক্ষণ পর আম্মু দরজা খুলে দিল,,
আম্মু–কিরে তুর সাথে এই মেয়েটা কে,,
আমি–তুমার বান্ধবির গুন্ডি মেয়ে,,
মিম–দেখ গুন্ডি বলবেনা একদম,,, ভালো হবে না কিন্তু,,দাঁড়া আগে আন্টি কে সালাম করে নি,,,,,
এই বলে আম্মু কে পায়ে ধরে সালাম করল,,
আম্মু–আরে মিম উঠ,,তুমি কত বড় হয়ে গেছ,, অনেক সুন্দর হয়েছ আগে থেকে,,
মিম–কেমন আছেন,,?
আম্মু–ভালো মা,,তুমি কেমন আছো,,
মিম–ভালো,,
আম্মু– তোমাকে সেই কবে যে দেখেছি,,, আমাদের ভুলে গেছ মনে হয়,,
মিম—না আন্টি,, আমি আপনাদের সবসময় মনে রাখছি,, আপনাদের কথা আম্মুর কাছ থেকে জিগ্গেস করতাম,,
আমি–এইখানে দাঁড় করায় থাকবে নাকি,,?
আম্মু–আমিতো ভুলেই গেছি,,,আসো মা ভিতরে আসো,,
আমি–আমাকে আসতে বলবে না,,?
আম্মু–না তুর আসতে হবেনা,,
আমি–ও এখন ঐ গুন্ডি টাকে পাইছ আমাকে আর দরকার নেই,,
মিম– কি বল্লি তুই,,(রেগে একেবারে লাল টমেটো হয়ে গেছে+ইচ্ছে করছে সস বানিয়ে খেয়ে ফেলি)

__এই বলে যখন আমার দিকে তেড়ে আসতে যাবে তখনি,,,,,,

সেটা নাহয় পরের পর্বে জানবেন,
ততক্ষন পর্যন্ত সাথে থাকুন,,,,,,,

————চলবে নাকি দৌড়াবে————

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *