অফিসের বস যখন রোমান্টিক বউ পর্ব-২৪


আমরা এবার ভেতরে ঢুকতেই রিদি দৌড়ে এগিয়ে এসে আম্মু আব্বুকে সালাম করলো।
আমার দিকে তাকিয়ে……
রিদি: আসো বসো।
আমি- জ্বি জ্বি জ্বি।

আমরা এবার সোফায় বসে আছি শালা হাত পা গুলো কাঁপছে।
একটু পরেই আমার অসুর মানে শ্বশুর মশাই সামনে এসে বসলো।
আমি মাথা নিচু করে আছি। রিদি ওর আব্বুর কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে আর হাসছে মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকিয়ে।
রিদির আব্বু- জ্বি সবটাই তো শুনলাম ফারিয়া আমার বলেছে।
আব্বু- জ্বি ভাইজান, এখনকার ছেলে মেয়েরা তো একে অপরকে ভালোবেসেই বেশি বিয়ে কর‍তে চাই তাতে ওরাও বুঝতে পারে একে অপরের সাথে কতোটা সুখি থাকবে।
রিদির আব্বু- জ্বি তা তো ঠিক বাট……
আব্বু- কি বাট?
রিদির আব্বু- বাট আমি এই বিয়েতে মত দিতে পারছিনা

__সাথে সাথে রিদি কেমন হয়ে আমার দিকে তাকালো, আমার চোখেও অজান্তে কিছুটা পানী এসে গেলো। আমি মুখ চেপে ধরলাম নিজের।
আম্মু আব্বুও শক হয়ে…..
আব্বু- কি বলছেন এসব? ওরা একে অপরকে ভালোবাসে আর আপনি তাদের খুশি ছিনিয়ে নিতে চাইছেন।

রিদি আব্বু রিদির দিকে তাকিয়ে……
রিদির আব্বু- এই বিয়েতে আমার অমত একটা কারনেই, আপনাদের ছেলে বড্ড পাজী। জানেন কতোভাবে আমায় হেনস্থা করেছে।😡 আমি ওদের ভালোবাসার বিপক্ষে নয় ওদের পক্ষেই আছি কিন্তু ওই যে আপনাদের ছেলে অফিসে এসে আমায় জ্বালাবে।

আমার মুখে কিছুটা হাসি এলো এবার, আমি বুঝতেই পারছিলাম ওর আব্বু কিছুতেই না করবে না কারন রিদি ওর আব্বুর আর এক ভালোবাসা।
আমি হাল্কা হেসে……
আমি- আঙ্কেল আপনি চিন্তা কইরেন না শুধু একবার বিয়েটা হতে দিন আরো বেশি আপনাকে জ্বালাবো।

রিদির আব্বু এবার আমার দিকে রাগী লুক দিয়ে……
রিদির আব্বু- আমি শুধু দেখবো আমার জাপানী তেল কবে আসবে।

শালা এটা শুনতেই রিদি মুখ চেপে চোখ গুলো বড়ো বড়ো করে আশ্চর্যের মতো তাকিয়ে রইলো আব্বু।
রিদি এবার……
রিদি- আব্বু তুমি 😱

__ভাইরে আমার হাসি এতো পাচ্ছে কি বলবো অনেক কন্ট্রোল করে রাখছি 😂
রিদির আব্বু- জ্বি রে মা ভাবলাম আমার মাথায় তো বেশি চুল নেই তাই নাঈমকে বললাম ও বললো ও নাকি আমায় জাপানী তেল এনে দেবে তাহলেই চুল আবার গজাবে।

আমার আব্বু আম্মুও কিছু বুঝতে না পেরে…..
আম্মু- দেখছেন তো ভাইজান আমার ছেলে এখন থেকেই কতো খেয়াল রাখছে আমার
রিদি- জ্বি তা তো রাখছেই। 😡

ভাইরে রিদি কি লুক দিচ্ছে মনে হচ্ছে আমায় গিলে খাবে। 😖
রিদি- আন্টি আঙ্কেল আমি আর অভ্র একটু রুমে যাচ্ছি।

আব্বু আম্মু আর আঙ্কেল….
আম্মু- নিশ্চয়, আমরা ততক্ষনে কথা বলি।
এটা শুনেই রিদি রেগে রুমে চলে গেলো।

__শালা আমার কি হবে রে 😖 আমি চুপচাপ বসেই রইলাম। গেলেই তো আমায় বাঁশ দেবে। খুন না করে ফেললে হয় শালা যা রাগী মেয়ে 😫
রিদির আব্বু…..
রিদির আব্বু- কি বলো তুমি এখনও বসে কেন? রিদি ডাকলো যাও।
আমি- জ্বি জ্বি জ্বি আঙ্কেল

_শালা গেলেই তো আমাত বাঁশ দেবে
আমি এবার রিদির রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে…
আমি- হে আল্লাহ এই ডাইনির হাত থেকে রক্ষা করো প্লিজ।
শালা না জানি কি হবে।
আমি এবার রুমে ঢুকেই ভদ্র ছেলের মতো রিদির কাছে গেলাম।
ভাইরে কাছে যেতেই আগুনের আভাস পেলাম।
শালা পুরাই ফুসছে রিদি চোখ বড়ো বড়ো করে……
রিদি:- হারামী, তুই আব্বুকে কি যাতা তেল বলেছিস।

আল্লাহ আল্লাহ বাঁচিয়ে নাও।
আইডিয়া এখানে নিঞ্জা টেকনিক ইউজ করে যেভাবে হোক বাঁচতে হবে,,,,,,,
আমি- দেখো ফারিয়া তুমি আমার পুরো কথাটা শুনো….
রিদি:- কি শুনবো শুনি 😡
আমি- তুমি যা তা তেল ভাবছো আরে জাপান থেকে তেল আনালেই কি জাপানী তেল হয়ে যায় নাকি। 😜
রিদি আরো রেগে…..
রিদি- কিন্তু আব্বুকে ওভাবে বলার কি আছে?
আমি হাহাহাহা করে হেসে….
আমি- বুঝলে তোমার আব্বু মনে হয় হুহুহু করেছিলো হয়তো। 😜
রিদি:- চুপ কুত্তা 😡
আমি- আচ্ছা তুমি ঐ তেলটার নাম শুনে এতো জ্বলে উঠলে কেন শুনি? অন্যকিছু তেল মনে করেছিলে তাই না।

রিদি এবার লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে…..
রিদি:- দূর আমি ওসব কেন মনে করতে যাবো শুনি?
আঊ- উমম আমি সব বুঝি,,,,,
আমি- ধ্যাত পাগল একটা,,,,,,

এটা বলেই বিছানায় গিয়ে বসলো, আমি দাঁড়িয়েই রইলাম রিদি এবার….
রিদি:- ওই পাশে আসো?
আমি অন্যমনস্ক হয়ে আছি ওদিকে আম্মু আব্বু শালা কি বলছে আল্লাহ জানে।
রিদি এবার রেগে উঠে এসে….
রিদি:- কি হলো ডাকছি শুনতে পাচ্ছো না। 😡
আমি:- হ্যাঁ হ্যাঁ।
রিদি:- ওই কোথায় ছিলে শুনি?
আমি- না মানে ভাবছিলাম
রিদি:- কি ভাবছিলে শুনি?
আমি- না ভাবছি এতো বড়োলোক শ্বশুর পেয়েছি তাই কি কি নেওয়া যেতে পারে সেটারই লিস্ট করছিলাম।

রিদি রাগী লুক দিয়ে মুচকি হেসে…..
রিদি:- এক টুকরো মাটিও দেবো না বুঝেছো। 😡
আমি ফারিয়ার কাছে গিয়ে ওকে বুকে টেনে…..
আমি- ওকে কিছুই লাগবে না শুধু তোমায় চাই।
রিদি হেসেহেসে……
রিদি:- তাই, আমার শখ স্বপ্ন গুলো তাদের কি হবে শুনি?
আমি- তোমার শখ স্বপ্ন তো সেদিন থেকেই আমার হয় গেছে যেদিন তোমায় প্রথম দেখেছিলাম নীল শাড়িতে।
রিদি:- উহু তারজন্যই তো অতো রাস্তার মাঝে ঝগড়া করেছিলে।
আমি- জ্বি করেছিলাম বলেই আজ তোমায় সারাজীবনের জন্য পেতে চলেছি।
রিদি আমার নাক টেনে…..
রিদি:- হুম। 😊
আমি রিদির চোখের দিকে তাকিয়ে…..
আমি- এই জানো তোমার চোখগুলো কিসের মতো?
রিদি:- কিসের মতো?
আমি- ঠিক আগুনের মতো, যতোবারই তোমার চোখের দিকে তাকাই আমার বুকের বামপাশটা জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
রিদি:- হিহিহি তাই।
আমি: ওই তোমার মধ্যে জাদুর চুম্বক লাগানো আছে নাকি বলোতো?
রিদি:- কই নাতো?
আমি- তাহলে সবসময় কেন মন চাই তোমার কাছেই আসতে।

রিদি এবার হেসেহেসে আমার গালে একটা কিস দিয়ে…..
রিদি:- এটার জন্য তাই না।
আমি- উহু এটার জন্য না….
রিদি:- তবে…..
(পাঠক-পাঠকীরা আপনাদের উদ্দেশ্য করে একটা কথা বলি, আপনাদের সবার জন্য একটা মেসেঞ্জার গ্রুপ খোলা হয়েছে, এই গ্রুপে শুধু আমার নতুন কোনো গল্প এর লিংক বের হলে, ওই গ্রুপে লিংক দেওয়া হবে তাহলে আপনাদের জন্য সুবিধা হবে, ছেলেদের জন্য একটা গ্রুপ আর মেয়েদের জন্য আর একটা গ্রুপ, আমাদের মেয়েদের গ্রুপে কিছু একটিভ মেম্বার দরকার সো জারা জারা এই গ্রুপে এড হতে চান তারা আমাকে ইনবক্সে নক করুন অথবা কমেন্ট করুন, গ্রুপ নাম: NR Story)
_আমি এবার ওর ডানহাতটা আমার বুকের বামপাশে রেখে……
আমি- তোমায় দুচোখ ভরে দেখে কিছুক্ষনের জন্য শান্তি পাওয়ার জন্য।
রিদি:- তাই, এবার তো সারাক্ষন তোমার পাশে থাকবো। তাহলে তখন আরো শান্তি পাবে
আমি- জ্বি। তোমার ওই মায়াবী মুখটা সারাদিনে একটাবার দেখে নিলেই আমার দিনটা কেমন বদলে যাই।
রিদি:- তাই নাকি।
আমি- জ্বি তার জন্যই তো সবসময় তোমার সাথে থাকি।
রিদি:- তাই, আচ্ছা বাবু আমাদের বিয়ের পর কিন্তু সব কাজ ভাগাভাগ করে নেবো।

_যাহ শালা, আমি তো কোনো কাজ করতেই পারি না না মানে বাসার কাজ ভালো লাগে না। 😰 তবুও…..
আমি- বাবু আমি তো কাজ পারি না।
রিদি:- আমি শিখিয়ে দেবো বাবু, প্রতিদিন তুমি আমার জন্য সকালে কফি বানাবে, ভাত বানাবে, আমার জামা কাপড় কেচে দেবে।

_আমি এবার ফারিয়াকে ছেড়ে দিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।
শালা কি দুর্ভাগ্য মাইরি, শেষে বিয়ে করে বৌকে রান্না করে খাওয়া হবে
শালা পুরো মুখটা পুরাই নীল হয়ে গেছে। 😖
আম্মু গো তোমার পোলা শেষে তোমার বৌমার গোলাম হয়ে থাকবে।
রিদি এবার আমায় পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে…..

লেখার মধ্যে কোন ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন,,,,,,,

————–চলবে না দৌড়াবে————–

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *