রিয়া : আরমান কথায় ছিলি এতক্ষণ?
আমি: কোথায় থাকি না থাকি সেটা তোকে বলতে যাবো কেনো?
রিয়া: কারন তুই আমার ভবিষ্যতের বর।আর এক বছর পর আমাদের বিয়ে তাই এখন থেকেই তোর খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করছি।
আমি: তোর মতো পেত্নীকে বিয়ে করবো আমি ইম্পসিবল
রিয়া: তাহলে তোর আব্বুকে গিয়ে বলতো একথাটা
আমি: আমি পারবো না তুই গিয়ে বল(আমি আব্বুকে খুব ভয় পাই)
রিয়া: বিয়েতে যেহেতু তুই রাজি না অতএব তুই বলবি
আমি: পারবো না। এর থেকে ভালো বিয়েটা করেই নেবো অবশ্য সেই ছোটোবেলা থেকেই তোকে বিয়ে করার শখ
রিয়াঃ কি বললি
আমিঃনা কিছুনা।আমার খুব খিদা লেগেছে।আম্মু কই
রিয়াঃ ঘরে
আমিঃআম্মু কথায় তুমি খেতে দাও খুব খুদা লাগছে
আম্মুঃআমি কাপড় গুছাচ্ছি রিয়াকে বল সে বেরে দিবে
আমিঃওই পেত্নী কি বললো শুনতে পেলি না? ভাত বেরে দে
রিয়াঃ আগে ফ্রেস হয়ে আয়
ফ্রেস হতে হতে পরিচয় পর্বটা সেরে ফেলি।আমি হলাম আরমান হোসেন হিমেল বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। এবার অনার্স ২য় বর্ষে পরি আর এতক্ষণ যার সাথে কথা বললাম সে হলো আমার কলিজা খালাতো বোন রিয়া ।ইনটার ১ম বর্ষে পড়ে, আমাদের এখান থেকেই লেখা পড়া করে।আমি রিয়াকে বড্ড বেশি ভালোবাসি কিন্তু সে আমাকে ভালোবাসে কিনা জানিনা। ফ্রেস হওয়ার পর খাওয়া দাওয়া করে কিছুক্ষণ ফেসবুকে ঘুরাঘুরি করে ঘুমিয়ে পরলাম।আমার আবার প্রত্যেক শুক্রবারে দুপুরে ঘুৃমানোর অবভাস আছে।ঘুম ভাঙ্গলো ফোনের শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি আমার বন্ধু রিপন কল দিছে
রিপনঃকিব্বে হালা কি করছিস
আমিঃঘুমাচ্ছিলাম তুই ফোনটা দিয়ে আমার ঘুমের বারোটা বাজালি
রিপনঃকেনো রাতে কি বউয়ের সাথে বাসর করেছিস যে এখন পরে পরে ঘুমাচ্ছিস
আমিঃহুম সালা কেনো ফোন দিছিস সেটা বল
আমিঃতোকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য যে আজকে আমরা ঘুরতে যাওয়ার কথা।
আমিঃহুম সত্যিই তো আজকে আমাদের ঘুরতে যাওয়ার কথা।আমিতো ভুলেই গেছিলাম
রিপনঃআমি জানি তুই ভুলে গেছিস তাইতো তোকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ফোন করলাম
আমিঃভালে করেছিস। বিপুল,লিমন,সরিফ এদের কি খবর?
রিপনঃএদেরকেও ফোন দিছিলাম এরা রেডি হচ্ছে তুইও রেতি হয়ে নে
আমিঃওকে দোস রাকছি
আমি রেডি হয়ে নিলাম।ভাবলাম মাকে বলে যাওয়ার দরকার তাই মাকে ডাকলাম
আমিঃমা ওমা আমি একটু ঘুরতে যাচ্ছি
আম্মুঃওকে যা কিন্তু রাতের আগেই চলে আসবি কেমন নহলে তুইতো জানিস তোর বাবা কেমন
আমিঃওকে তারাতারি চলে আসবো
রিয়া দারিয়ে দাঁড়িয়ে শুনছে কিন্তু কিছু বললো না
চলে এলাম বন্ধুদের আড্ডায়।
বিপুলঃওই এতক্ষণ লাগে আসতে? মেয়েদের মতো সাজতে এক ঘন্টা লাগে নাকি তোর?
আমিঃনারে আম্মকে মেনেজ করতে সময় লাগলো।কই তোরা সবাই এসেছিস?
লিমনঃহুম সবাই এসেছে। চল যাওয়া যাক তাহলে।
আমরা মোটরসাইকেল দিয়ে অনেক ঘুরলাম আর তার সাথে আড্ডা দেওয়া এভাবে আড্ডা দিতে দিতে কখন যে রাত ১২টা বেজে গেছে সেদিকে খেয়ালই দেই নাই।আজকে আমার খবর আছে এমনিতেই বাবা বেশি রাত করে বাইরে থাকা পছন্দ করে না তার উপর আবার এতো রাত ভাবতেই ভয় লাগছে নাজানি বাবা মনে হয় এখনো লাঠি নিয়ে দারিয়ে আছে।চুপি চুপি পাছি টপকিয়ে বাড়িতে ডুকছি।মনের মর্ধে ভয় কাজ করছে।যেইনা বাড়িতে ডুকছি ওমনি কে জেনো আমাকে কলার ধরে টানতে টানতে রুমের মধ্যে নিয়ে গেল।ভালোভাবে চারপাশে তাকালাম আরে এটাতো রিয়ার রুম তাহলে কি রিয়া….
রিয়াঃওই তুই কথায় ছিলি এতক্ষণ? তুই কি জানিস তোর জন্য মামা হাতে লাঠি নিয়ে অনেক্ষন ওয়েট করছিলো?একটু আগেই ঘুমিয়ে গেলো
কথা শুনে আমি নিশ্চিত হলাম এটা রিয়া। যাক আমি মনে করছিলাম বাবা।বাবার হাতে পরলে কি যে হাল হতো আল্লাই জানে।আমি একদিনো এতো দেরি করে বাসায় ফিরি নাই।
রিয়াঃকিরে কথা বলছিস না কেনো?
আমিঃসবাইতো ঘুমিয়ে গেছে তাহলে তুই এখনো জেগে আছিস যে?
রিয়াঃআমি কখন ঘুমাই না ঘুমাই সেটা তোকে বলতে হবে।রাতে খেয়েছিস?
আমি মাথা নারিয়ে খাইনি সেটা বুঝিয় দিলাম
রিয়াঃআমি জানি তো তাই তোর জন্য খাবার আগেই এনে রেখেছি
তাকিয়ে দেখলাম টেবিলের উপর খাবার রাখা।আমি চুপচাপ খাবারগুলো নিয়ে খেতে শুরু করলাম। আমি রিয়ার দিকে চোখ পরতেই দেখে কেমন মায়াবী দৃষ্টিতে যেন তাকাচ্ছে
রিয়াঃ(কুত্তা আমি যে তোর জন্য নিজে না খেয়ে ঘরে এনে খাবো ওজিহাতে তোর জন্য রেখে দিলাম আর কুত্তাটা এখন নিজে নিজেই গিলছে।একবার জিজ্ঞেস করলো না খেয়েছি কি না)
আমার হঠাৎ কেনো জানি মনে হলো রিয়াও কিছু খায়নি তাই জিজ্ঞেস করলাম
আমিঃকিরে তুই খেয়েছিস?
রিয়াঃকুত্তা আমি না খেয়ে তোর জন্য রেখে দিলাম আমার ভাগেরটা আর তুই এখন জিজ্ঞেস করছিস(কান্না করে)
আমি জানতাম এরকমি কিছু একটা হবে।আমি প্লেট থেকে খাবার তুলে নিয়ে রিয়ার মুখের সামনে ধরলাম
আমিঃনে হা কর
রিয়াঃআমি খাবো না তুই একাই খা
আমিঃরাগ করছিস কেনো হা কর
রিয়াঃআগে প্রমিস কর যে আর কখনো রাতে দেরি করে বাসায় ফিরবি না।মামার বকুনি খাবি না
আমিঃওকে এবার হা কর
আমি ওর মুখে খাবার তুলে দিতে লাগলাম।ও এমনভাবে খাচ্ছে যেন দুইদিন থেকে কিছু খায়নি।আমার জন্য পাগলিটা না খেয়েছিলো আমি জানি আমি না খেলে পাগলিটাও খাবার মুখে নেয় না।খাওয়া শেষ করে রিয়া প্লেটগুলো রেখে আসলো।আমিও আমার ঘরের দিকে রওনা দিলাম ঘুমানোর জন্য
রিয়াঃকথায় যাচ্ছিস
আমিঃঘরে যাচ্ছি।ঘুম ধরছে ঘুমাবো
রিয়াঃতোর ঘরে তালা দিয়ে রেখেছে মামা
আমিঃকিইইই তাহলে এখন কথায় ঘুমাবো????
রিয়াঃএখানেই আমার রুমে শুয়ে পর
আমিঃআহাহাহা আমি এখানে শুইলে তুই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবি না
চলবে……