লাবন্য সামনে আসতেই.
—ঠাসসসস ঠাসসসসসস,হারামজাদা তোরে বলছি না,বাবা আসার পরই তোকে তোর কর্মের শাস্তি দিব,(লাবন্য)
–(গালে হাত দিয়েই আছি)
–লাবন্য ,তুই ছেলেটাকে মারলি কেন?তোর তো সাহস কম না(ধমক দিয়ে আসাদ চৌধুরি কথাটা বলল)
–বাবাহহহহ,ওর জন্য তুমি আমাকে ধমক দিতে পারলে?আর ও জানো কি করছে?
–কি করেছে(লাবন্যর বাবা)
–ও আমাকে চোর বলেছে,আমি নাকি এই বাড়িতে চুরি করতে এসেছি,তাই আমাকে হাত বেধেছে,মূখ বেধেছে,আর আমাকে দিয়ে এতদিন ধরে রান্নাও করিয়েছে
–কি বলছিস এগূলো?
–হুম বাবা,আরও কতভাবে আমাকে জ্বালিয়েছে৷
–তুই ওকে বলিস নি?তুই এবাড়ির মেয়ে?
–হুম বলেছিলাম,তারপরও ও আমাকে চোরনি বলেছে,আমাকে দিয়ে রান্না করিয়েছে
–বুয়া আর রহিম ওকে বলেনি?
–না,ওরা তো বাসায় নেই,আমি এসেই ওদের ছুটি দিয়ে দিছি
–আরমান,এই দিকে আসো
–জ্বী আংকেল(গালে হাত দিয়েই)
–তুমি ওর কথা শুনো নি কেন?(লাবন্যর বাবা)
–আপনি কি আমায় বলেছেন?আপনার মেয়ে আছে,আর ও বাসায় আসবে?আর আমি চিনিনা বলেই তো এমন করেছি(আমি)
–লাবন্য ও ঠিকই বলেছে,ও তো তোকে চিনেনা,আর চিনলে এমন করত না(লাবন্যর বাবা)
–হুম,মানলাম ও এ বাসায় কেন?আর ওকে আমি কোথাও দেখেছি মনে হয়,ওই ফাজিল ছেলে,বল তোর সাথে আগে কই দেখা হইছে?(লাবন্য)
–(এইরে আমাকে মনে হয় এখনও চিনতে পারেনি,এখন চিনতে যেহেতু পারেনি,পরিচয় দেওয়া যাবেও না,এর আগেই যেই চড় গুলো দিছে,বলার মত না)
–ওই চুপ কেন তুই?
–জ্বি, আমাকে????আমাকে আর কোথায় দেখবেন,আমি তো রাস্তায় থাকি,বাসা কিছুই নেই,হয়ত রাস্তায়ই দেখছেন আমাকে
— না না,আমার কেন জানি মনে হচ্ছে তোকে কোনো একটা গ্রামে দেখেছি,
–গ্রাম পাবো কোথায়,এতদিন তো আমি এতিম খানায় ছিলাম৷আর কিছুদিন আগে এতিমখানা থেকে বের করে দিছে
তখনই লাবন্যর বাবা বলে উঠল
–বাবা,তুমি এতিম,আমাকে আগে কেন বলো নি
আসলে আংকেল,আপনার ভালোবাসা পেয়ে ,আমি যে এতিম সেটা ভুলেই গেছি(একটু পাম দিলাম আর কি)
তখনই লাবন্য বলল
–হয়ত তুই যেটা বলছিস সেটাও হতে পারে,তোর সাথে আমার দেখা হয়নি ,কিন্তু তোর মতই একটা ছেলেকে আমি মেরেছিলাম৷লুইচ্ছা ছিল ছেলেটা,আমাকে দেখেই একটা গান গাইছে,এক খান চুম্মা দে
–তো আপনি কি ওই ছেলেটাকে চুম্মা দিয়েছিলেন?(জেনেও না জানার মত)
–চুম্মা???? তোকে এখন যেমনটা দিয়েছি,ওই ছেলেকেও তেমনই পানিসমেন্ট করেছী!আর বাবা ও এতিম খানা থেকে এখানে আসল কেমনে?(লাবন্য)
–আসলে মা তোকে ত বলিই নি!এই ছেলেটা আমাকে গুন্ডাদের হাত থেকে বাঁচাইচে
তারপর সবকিছু লাবন্যকে খুলে বলল৷আর তখনই লাবন্য বলে উঠল
–হুম,এই যে শোন ফাজিল ছেলে।তুই শুধু আজকে বেঁচে গেলি আমার বাবাকে বাঁচানোর জন্য,নয়ত তোকে শেষ করে দিতাম(লাবন্য)
–হুম,সরি মেম.(আমি)
–লাবন্য,ওর একটা কাজ লাগবে,ছেলেটা একটা কাজ চাইছে,আর আমি চাচ্ছি আমাদের ফ্যাক্টরিতেই ওকে একটা ভালো চারকি দিবো(লাবন্যর বাবা)
–হুম দিবে ভালো কথা,কিন্তু ও কি লেখাপড়া করেছে?(লাবন্য)
–বাবা,তুমি কোন ক্লাস পর্যন্ত পড়েছো(লাবন্যর বাবা)
–আসলে,আংকেল আমি লেখাপড়া করিনি,আমি মূর্খ একটা ছেলে
–দেখছো বাবা,ও মুর্খ,ওর মত মুর্খকে তুমী কাজ দিবা?তো কি কাজ দিবা বাবা?(লাবন্য)
–একটা তো দিতেই হবে,তার চেয়ে ভালো ,ও তোর অফিস সহকারি হয়েই জয়েন করুক৷তোর বিভিন্ন কাগজ পত্র এগিয়ে দিবে (লাবন্যর বাবা)
–বাবা,তুমিও না,আমার সহকারী হিসাবে এই মূর্খ খেতকে দিবা আর যে লেখাপড়াই জানেনা সে আমার কাগজ পত্র সম্পর্কে কি বুঝবে
?
–আমি কিন্তু একটু আকটু ইংরেজী আর বাংলাও পড়তে পারি(আমি)
–হুম,তাতেই হবে(লাবন্যর বাবা)
—ওপপপপপপসসস,অসহ্য.
বলেই লাবন্য চলে গেল৷
আর তখনই লাবন্যর বাবা বলে উঠল
–বাবা,তুমি রাগ করো না,আসলে মা মরা একমাত্র মেয়ে তো,অনেক আদরে বড় হইছে
–না আংকেল ও তো কিছু করেনি,উল্টো আমি নিজেই তার সাথে অনেক বাজে ব্যবহার করে ফেলছি৷
–আচ্ছা বাদ দাও৷কালই আমার সাথে তুমী অফিসে যাইবা
–জ্বি আংকেল
পরেরদিন ওনার সাথে অফিসে গেলাম৷
–ওরে বাবারে…এত বড় বিল্ডিং?এটা অফিসসসসসস(অবাক হয়ে)
–হুম৷অবাক হচ্ছো নাকি(আংকেল)
–হুম আংকেল,অনেক বড় অফিস তখনই পিছন থেকে লাবন্য কোথা থেকে যেন আসল,আর এসেই বলল
–এই যে খেত,এটা বাসা নয়,এখানে ওনাকে আংকেল বলা যাবেনা,(লাবন্য)
–তো কি বলব?(আমি)
–উনি এই কোম্পানির মালিক,সবাই উনাকে অফিসে বস বলে ডাকে৷তো তুমিও বস বলেই ডাকবা
–(মনে মনে বলতে লাগলাম,লাবন্য তো আমাকে তুই করে বলত,আর অফিসে ও আমাকে তুমি করেই বলছে,বুঝতে পারছি এখানে সব সময় ভালোভাবে কথা বলতে হবে)
–কি ভাবছো আরমান(লাবন্য)
–,ভাবছি বসকে বস বলেই ডাকব,তো বসের মেয়েকে কি বলে ডাকব?(আমি)
–মেডাম বলে ডাকবা(লাবন্য)
–আপনি কি আমার শিক্ষক নাকি?আপনাকে আমি মেডাম বলব?শিক্ষিকাদের মেডাম বলতে হয়,আপনি জানেন না?(আমি)
–একদম চুপ ফাজিল ছেলে,অফিসে না হলে তোর মূখে এমন একটা ঘুষি দিতাম,একেবারে চেহারা পাল্টিয়ে ফেলতাম
–(মনে মনে বললাম কি গুন্ডি মেয়েরে বাবা?)
–আহঃ লাবন্য ছেলেটা নতূন অফিসে আসছে,ওকে আগে বুঝাবি তা না করে ওর সাথে এমন করছিস কেন?যা এখন ওকে নিয়ে ওর কাজ বুঝিয়ে দে
–হুম৷
তারপরই লাবন্য আমাকে নিয়ে ভিতরে গেল৷আর তখনই ভিতরে একটা রুমে নিয়ে গেল৷আর বলল
–এ খেত,শোন,বাবার সামনে ভালোভাবে কথা বলেছি,একটা কথা ভালো করে শুনে রাখ,এখানে যেটা যেটা বলব সেটা সেটা একদম চুপচাপ করবি,কোনো কথা বলবি না(লাবন্য)
–হুম(মাথা নাড়িয়ে)
–আর শোন,অফিসের সবার সামনে ভদ্রতা বজায় রেখে,তাদের সাথে একটু শুদ্ধভাবে কথা বলবি
–হুম
–আর একটা কথা বলার আছে
–হুম বলেন
–আমাদের অফিসে অনেক কর্মকর্তা আছে,তাদের সাথেও ভালোভাবে কথা বলবি
–এই এই কি বললেন?কর্মকূত্তা??
আগে জানতাম পাগলা কুত্তা,কালা কুত্তা,লাল কুত্তা আছে,আর এখন দেখি কর্মকুত্তাও আছে!(অবাক হয়ে)
–ওই হারামজাদা,তোরে কর্মকর্তা বলছি,কুত্তা বলিনি
–আর যাই বলেন,কর্মকূত্তাগুলোকে আমার দেখতে খুব ইচ্ছে করচে,প্লিজ আমাকে ওদের কাছে নিয়ে যান,কর্মকূত্তা কেমন দেখতে?আমি দেখতে চাই!তাদেরও লেজ আছে নাকি?মানুষকে কামড় দেয় নাকি?হাড্ডি খায় নাকী?লোম আছে নাকি৷আমি দেখব
–হারামি,আরম্মম্মম্মমান(অনেক জোড়ে চিৎকার দিয়ে তারপরেইতো…………
চলবে…….