কলেজের মাঠে বসে আমার বান্ধবী ইরার সাথে কথা বলছি আর হাসাহাসি করছি। ইরা মাঝে মাঝে আমার ওপর ঢলে পড়ছে।হঠাৎ কোথা থেকে সাদিয়া এসে দাড়িয়ে আমার দিকে রাগি লুকে তাকিয়ে আছে।
আমি- আরে এই তোমার আসার সময় হলো সেই কখন থেকে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।
সাদিয়া-কতোটা অপেক্ষা করছো সেটা দেখতেই পাচ্ছি।
আমি- কি বলছো এসব আসো তো ঐ দিকটায় বসি।
সাদিয়া- ইরার সাথে তো খুব ভালোই আছিস।আমাকে কি তোর প্রয়োজন আছে নাকি আর।
আমি- কি বলছো এগুলা পাগল হয়ে গেছো।
সাদিয়া- কতোবার কল করেছি তোকে কল রিসিভ করিসনি কেন।
আমি- আমাকে কল করেছো কয় আমি তো দেখি নি।সরি মোবাইল সাইলেন্স ছিলো খেয়াল করিনি।
সাদিয়া- তোর খেয়াল করতে হবে না আজ থেকে তোর আর আমার সম্পর্ক শেষ। তুই অন্য একটা মেয়ের সাথেই এতোটাই বিজি তুই আমার কল রিসিভ করার সময়টাও তোর হয় না।তুই আমাকে কতোটা ভালোবাসিস সেটা আমার জানা হয়ে গেছে।
আমি- সম্পর্ক শেষ মানে কি সাদিয়া। কি বলছো এসব।
সাদিয়া- শেষ মানে কি বুঝিস না ব্রেকআপ আজ থেকে তোর সাথে।
আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায়। এটা রোজকার নাটক সকালে ব্রেকআপ করে আবার বিকালে কল করে কান্নাকাটি করে
আজকে আর ক্লাস করতে ইচ্ছে হলোনা। হোস্টেলে চলে গেলাম। যেতে যেতে আমার পরিচয় টা দেয় আমি মোঃ রিফাত হোসেন শাওন বাবা মার ২য় সন্তান। আমার একটা বড়ো ভাই আছে। বাবা ব্যবসা করে আর মা গৃহিনি। ভাইয়া পড়া শেষ করে আব্বুর কাজে সাহায্য করছে।আর আমি অর্নাস ২য় বর্ষের ছাত্র। বাসা থেকে কলেজ অনেক দূরে তাই হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা চালাচ্ছি।
আর সাদিয়া হচ্ছে আমার একমাত্র গালফ্রেন্ড।একমাত্র বলার কারণ হলো আমি অন্য মেয়ের সাথে কথা বলতে পারিনা বললে আমার অবস্থা খারাপ করে দেয়।সাদিয়া আমার থেকে জুনিয়র অর্নাস ১বর্ষের ছাত্রী। সাদিয়া দেখতে একদম পরীর মতো। দেখতে ফর্সা হাসলে গালে টোল পড়ে ঠোঁটের নিচে একটা তিল আছে। যেই দেখবে সেই ক্রাশ খাবে।আমিও যেদিন সাদিয়াকে ১ম কলেজে দেখি সেদিন ই ক্রাশ খায়।অনেক কষ্টে পটাইছি।২ বার থাপ্পড় খেতে হয়ছিলো সাদিয়ার হাতে শালির গায়ে কি জোর রে ভায় এতো জোরে মার ছিলো দাঁত পর্যন্ত নড়ে গিয়েছিলো।সাদিয়াও একটা লেডিস হোস্টেলে থাকে।
হোস্টেলে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুম দিলাম। বিকেলে ঘুম থেকে ওঠে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি আজ আর কোনো কল আসেনি সাদিয়ার এমনকি একটা মেসেজও না।তাই আমিই কল করতে গিয়ে দেখি আমার নামবার ব্লক করে রেখেছে।
মেসেঞ্জারে গিয়ে দেখি একি অবস্থা ইমোতেও সেম।সত্যি সত্যি কি ব্রেকআপ করে দিলো নাকি।হয়তো রেগে আছে এখনো রাতে ঠিক হয়ে যাবে।বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। সন্ধ্যার শেষে রাত এখনো কোন কল আসেনি সাদিয়ার। আর আমাকেও এখনো ব্লক করে রেখেছে সব জায়গায়।সকালে কলেজে গিয়ে রাগা ভাংগাতে হবে পাগলীটার।এসব ভাবতে ভাবতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।
পরের দিন কলেজে গিয়ে দেখি সাদিয়া আসেনি। ওর একটা বান্ধবী নাম হচ্ছে মিম। মিম আর সাদিয়া একই হোস্টেল থাকে।মিমকে ডাক দিলাম।
মিম- ভাইয়া কিছু বলবেন।
আমি- সাদিয়া কোথায় কলেজে আসেনি।
মিম- ভাইয়া সাদিয়া তো চলে গিয়েছে।
আমি- চলে গিয়েছে মানে?
মিম- সাদিয়া ওর বাসায় চলে গিয়েছে।
আমি- কবে আসবে কিছু বলেছে।
মিম- না ভাইয়া। আপনার সাথে নাকি ব্রেকআপ করেছে।
আমি- হুম এটাতো রোজ কার বেপার।
মিম- এবারের বেপারটা মনে হয় আলাদা।
আমি- মানে?
মিম- মানে হলো ভাইয়া এবার মনে হয় সত্যি সত্যি ব্রেকআপ করেছে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম কি হয়েছে। সাদিয়া বললো ওর সাথে পারমানেন্ট ব্রেকআপ করলাম আর আসবো না কখনো সব জায়গা থেকে ব্লক দিয়ে দিছি।থাকুক ও ওর মতো আমি আমার মতো।
একথা শোনার পর আমার মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পড়লো। সাদিয়া আমাকে ছেড়ে গিয়েছে এটা ভাবতেও অবাক লাগছে। সাদিয়া কিভাবে পাড়লো এটা আমার সাথে করতে।খুব কান্না পাচ্ছে। দৌড়ে সোজা হোস্টেলে চলে আসলাম। রুমে এসে মন ভরে কান্না করলাম।
ঠিক আছে সাদিয়া যদি আমার সাথে কথা না বলে ভালো থাকো আমিও আর তোমাকে বিরক্ত করবোনা। আমিও আজ বাসায় চলে যাবো।এখানে থাকলে আরো কষ্ট পাবো। বাসায় চলে যাবো যখন মনটা একটু হালকা হবে তখন না হয় ফিরে আসবো। তাছাড়া অনেক দিন থেকে বাসায় যাওয়া হয়নি।বাবা মা কে না জানিয়ে বাসায় চলে যাবো আজকে।বাসায় গিয়ে সারপ্রাইজ দিবো তাদের।
সব কিছু একটা ব্যাগে ভরে চলে আসি বাস স্টেশনে টিকেট কেটে বসে পড়ি বাসে চোখ বন্ধ করে বসে আছি একটু পর বাস চলতে থাকে আপন গতিতে। ২ ঘন্টা পর বাস থেকে নেমে একটা সিনে্এনজি নিয়ে বাসায় চলে আসি।
বাসায় এসে কলিং বেল বাজালাম তখনই,,,,,,,,
চলছে চলবে