পাশের বাসার মেয়ে যখন রোমান্টিক বউ পর্ব-০৬

— কেন আম্মু? (আমি)
— এগুলা কি হচ্ছে শুনি? (আম্মু)
— কোন গুলা?(আমি)
— যে গুলো তুই করছিস। ঐশীর সাথে এসব কি দেখছি আমি।(আম্মু)
— হিহিহি, আম্মু তোমার লজ্জা করে না এসব দেখতে যেখানে তোমার পোলা এসব করছে।(আমি)
— ওয়েট তোর আব্বুরে বলছি।(আম্মু)
ভাইরে বুকটা আমার ধরাস করে উঠলো এবার
— আম্মু আম্মু আব্বুকে কেন?(আম)
— তোর আব্বুও দেখুক তার পোলা কি করে? ছি আরফান আমি ভেবেছি আমার পোলা সবার থেকে আলাদা।(আম্মু)
— আম্মু সবাই তো প্রেম করে আর আমি তো ভালোবাসি ঐশীকে। আচ্ছা তুমিই বলো তুমি কি ঐশীকে লাইক করো না।(আমি)
— লাইক করার সাথে কি আছে?(আম্মু)
— আহা করো কিনা বলবা তো।(আমি)
— জ্বি করি তো…(আম্ম)
— যদি ও এই বাসার বৌ মা হয়ে আসে তোমার তো ভালোই হবে তাই না। এই দেখো সারাদিন তুমি কাজ করছো যতোই হোক তোমার তো বয়স হয়েছে তাই না। এবার তো রেস্ট লাগবা।(আমি)
ভাইরে আম্মুরে পটানোর ট্রাই চলতেছে
— হুম বুঝেছি পটানো হচ্ছে তাই না।(আম্মু)
— হিহিহি আম্মু বুঝে যখন গেছো মেনেও নাও না। প্লিজ আম্মু প্লিজ আম্মু আব্বুকে বলো না প্লিজ।(আমি)

আমি জানি আম্মু আমার কখনো কোনো কথা রাখেনি এমন নয় আগের মতো এবারো চোখ রাঙিয়ে….
— খুব বড়ো হয়ে গেছিস তাই না, শুধু বিয়ে বিয়ে।(আম্মু)
— হুম আম্মু
— পড়াশোনা তো গোল্লায় তুলে দিয়েছো।(আম্ম)
— না আম্মু তুমি যদি রাজী হও এবার থেকে মন দিয়ে স্টাডি করবো।(আমি)
— এটা অনেকবার শোনা হয়েছে, নতুন করে আর শোনা লাগবে না। (আম্ম)
এটা বলে আমার রুম থেকে চলে গেলো।
বিকালে আমি বসে আছি কিচেনে আম্মুর কাছে, এমন সময় ঐশী এলো…..
— আন্টি আজ আপনার পোলা দেখি এখানে? (ঐশী)
— হুম এখানে, এখন কি নোট দিবি নাকি তাহলে যা রুমে নিয়ে যা।(আম্মু)
হায় আল্লাহ আম্মু কি পুরো ফুল পারমিশন দিচ্ছে নাকি
— জ্বি আম্মু অনেক নোট আছে তো তাই একটু লেট হবে, যদি আমার বাসা থেকে কেউ আসে বলে দেবেন এটা।(ঐশী)
— আচ্ছা যা।(আম্মু)
আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে পুরা ফিদা হয়ে গেছি, শালা এটা কোনো মুভির অংশ নাকি বাস্তব
আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে…
— কিরে যা নোটস গুলো নিয়ে নিবি।(আম্মু)
আমি ভয়ে ভয়ে…
— এই ঐশী তুই এখন যা পরে নিয়ে নিবো। (আমি)
আম্মু গম্ভীর হয়ে….
— ঐশী তুই রুমে যা আমি ওকে পাঠাচ্ছি।(আম্মু)
ঐশী এবার চলে গেলো।
আম্মুর হাত ধরে আমি….
— ও আম্মু আমি যাবো না। (আমি)
— দুদিন পর বৌ বানাবা আর যাবা না বললে কিভাবে হবে শুনি। যা টাইম দে। (আম্মু)
— আম্মু তুমি তাহলে ফুল পারমিশন দিচ্ছো।(আমি)
— জ্বি।
–love u ammu
— বেশি পিরিত না দেখিয়ে রুমে যা।(আম্মু)
ভাইরে প্রচুর খুশি লাগছে আমি এবার রুমে গিয়েই ঐশীকে জড়িয়ে ধরলাম…
ঐশী চিৎকার করে…
— এই কে কে কে? (ঐশী)
আমি ওর মুখে হাত রেখে…
— আমি রে। (আমি)
— তা এভাবে কে জড়িয়ে ধরে শুনি।(ঐশী)
— আমি ধরি।(আমি)
— যদি আম্মু চলে আসে (ঐশী)
— এলেও অসুবিধা নাই।
— নাই মানে?(ঐশী)
— আম্মু সব জানে।
— সত্যি।(ঐশী
— জ্বি তোকে বৌ হিসাবে মেনে নিয়েছে।(আমি)
— তা তো ভালোই কিন্তু আমার আব্বু আম্মু(ঐশী)
— আরে ছাড় তো পরে ঠিক মানিয়ে নেবো।(আমি)

এভাবে প্রায় দুবছর রিলেশন চলার পর একদিন ঠিক করলাম আমি নিজেই ঐশীর বাসায় আমাদের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবো। আমি এখন একটা প্রাইভেট কোম্পানীতে জব করি। আমি বাসাই থাকি না আমি বাইরে থাকি কোম্পানী থেকে ফ্লাট দিয়েছে, ঐশীর সাথে তেমন দেখাও হয় না শুধু দেখা হয় বলতে সপ্তাহে একদিন। তারপর তো যখনই ফ্রী থাকি তখন কল টেক্সট ভিডিও কল।
দিন দিন মেয়েটার প্রতি এতো মায়া বেড়ে গেছে ও আমার সাথে একটা মিনিটও থাকতে পারে না আমিও। তাই কাল রাতে দুজনই ঠিক করেছি। ঐশীও একটা ছোট্টো কোম্পানীতে জব করে। আমাদের রিলেশন চলছে সেটা ঐশীর আম্মু আব্বু কিছুটা টের পেয়েছে অনেকবার রাতে কথা বলতে শুনে নিয়েছে।
যাইহোক বাদ দেওয়া যাক এসব কথা আসল সিনে আসি…..
আজ অফিস নেই তাই ভেবেছি আজ বাসায় গিয়ে সবটা সেরে আসবো।
ঠিক সকালে রওনা দিলাম, বাসায় এসে উঠলাম ১১ টার দিকে।
এতোটা ট্রাভেল করার পরে একটু রেস্টের দরকার তাই গোটা দুপুরটা রুমেই থাকলাম, এর মধ্যে ঐশী দশ থেকে বারোবার এসেছে। আমি বাসায় এলে মেয়েটা ওর অফিস বন্ধ করে আমার কাছে এসে বসে থাকবে, কতবার মানা করেছি শোনেনি, তার উপর কিছু কথা বললেই বলে কিনা, আমি এখন পুরাতন তো নতুন পেয়ে গেছো, হুম বুঝেছি প্রচুর হ্যান্ডসাম হয়ে গেছো তো তাই আমাকে এখন কেন পাত্তা দেবে। ভাইরে এটা ঐশীর কথা নয় এটা পৃথিবীর সব গফ এর মুখে লেগে থাকা কথা। জানি এসব কথা শুরু হলেও ঝগড়া অশান্তি হবে আর এতে ঐশীও কষ্ট পাবে আর আমিও।

বিকাল গড়িয়ে এবার সন্ধা নেমে এলো, বেশ শার্ট প্যান্ট পড়ে ঐশীর বাসায় গেলাম আমার আম্মুকে নিয়ে, এখনো আমার আব্বুকে জানানো হয়নি খুব ভয় করে আব্বুকে, পুরোটা এদিকে ঠিক করে নিই তারপর আম্মু আব্বুকে মানিয়ে নেবে।
ঐশীর বাসার সামনে গিয়ে কলিং বেল চাপতেই ঐশী বেরিয়ে এলো….
ভাইরে নীল শাড়ি নীল চুড়ি নীল কপালের মাঝে এক খানি টিপ পুরাই মাশাল্লাহ নীল রং আমার ভীষন প্রিয় সেটা ঐশী জানে আর এরজন্যই ঐশীর বেশির ভাগ ড্রেস নীল রং এর।
পুরাই ক্রাশ খাইলাম রে।
আমি তো ঐশীর দিকে একভাবেই তাকিয়েই আছি, এর মধ্যে যে কখন আম্মু ভেতরে চলে গেছে টেরই পেলাম না।
ঐশী এবার আমার সামনে এসে আমার হাতে একটা চিমটি কেটে..
— বলছি বাইরেই থাকার ইচ্ছা আছে নাকি।(ঐশী)
— এই এই কি কি না না।(আমি)
— বলি ভেতরে আসেন।(ঐশী)
— হ্যাঁ হ্যাঁ চল।(আমি)
— এই তোমায় না কতবার বলেছি তুমি দিয়ে কথা বলবে আমার সাথে।(ঐশী)
— এই দেখ আমি পারি না(আমি)
— ট্রাই নয় করতেই হবে।(ঐশী)
— ওকে বাবা, এখন তো আমাকে নিয়ে চল।(আমি)
— জ্বি।
এবার ভেতরে গিয়ে ঐশী আব্বু আম্মুকে সালাম দিলাম।
— আঙ্কেল আন্টি কেমন আছেন? (আমি)
— জ্বি ভালো বাবা। তুই কেমন আছিস? (আঙ্কেল)
— তুই কবে এলি কই কিছু জানলাম না তো। (আন্টি)
— এই তো আন্টি আজ দুপুরের দিকে এসেছি।
— তুমি দাঁড়িয়ে কেন বাবা বসো। (আন্টি)
এবার আমার আম্মু….
— তারপর বলেন ভাইজান শরীর ঠিক আছে তো আপনার? (আম্মু)
— ওই ঠিক আছে ভাবী, দিন দিন প্রেশার বেড়েই চলেছে। (ঐশীর আব্বু)
— ঠিকঠাক রুলস ফলো করেন সব ঠিক হয়ে যাবে।(আম্মু)
— জ্বি, আচ্ছা আরফানের আব্বু কোথায় ও আসেনি।(আঙ্কেল)
— না, ওর একটু শরীরটা খারাপ।(আম্মু)
— ওহ আচ্ছা।(আঙ্কেল)
ঐশী এবার ওর আব্বুকে কানে কানে কি যেন বললো…
ঐশীর আব্বু এবার…
— ঐশীর কাছে তো সবই তো শুনেছি, কিন্তু। চলো একটু ছাদে যাই।(আঙ্কেল)
— ওকে আঙ্কেল।(আমি)
এবার আমরা ছাদে গেলাম, বেশ আকাশে ফুরফুর করে হাওয়া বইছে। আঙ্কেল ছাদের একটা কোনায় গিয়ে হঠাৎ…
— আরফান তুমি আমার নিজের পোলার মতোই তবে আমি একটা রিকুয়েস্ট করবো সেটা তুমি রাখবা। (আঙ্কেল)
আমি এরকম কথা শুনে খুব অবাক হলাম, আমি মিষ্টি কথায়…
— জ্বি আঙ্কেল বলুন না, আমিও আপনাকে নিজের আব্বুর মতোই মানি। (আমি)
— আরফান আমি এই বিয়ে মন থেকে মেনে নিতে পারবো না।(আঙ্কেল)
এই কথাটা শোনার সাথে সাথেই আমার পায়ের নীচ থেকে মাটি সরে যেতে লাগলো।
— মানে?(আমি)
— আরফান আমার অবস্থা বোঝার ট্রাই করো, আমার একটাই মেয়ে আমি চাই আমার মেয়েকে এমন একজনের হাতে তুলে দিতে সে আমার মেয়ের ভাত কাপড়ের দায়িত্ব ভালোভাবে নিতে পারে।(আঙ্কেল)
আমার এবার ভীষন রাগ হচ্ছে এবার, তবুও কন্ট্রোল করে…
— আঙ্কেল আপনার কি মনে হয় আমি আপনার মেয়ের ভাত কাপড়ের দায়িত্ব নিতে পারবো না।(আমি)
— কি জানি পারবে কিনা? তোমার স্যালারিই বা কতো?(আঙ্কেল)
— ওহ বুঝলাম আপনার অসুবিধাটা আমার জবের স্যালারির উপর।(আমি)
— না, আমি চাই আমার মেয়েকে কোনো এক সরকারি চাকুরি ওয়ালা পোলার হাতে তুলে দিতে চাই, কখনো যেন তার দুয়ারে দুঃখ আসে।(আঙ্কেল)
— ওহ বুঝলাম সরকারী ওয়ালা পোলা চাই।(আমি)
— জ্বি। আমার আর কিছু বলার নেই।(আঙ্কেল)
— জ্বি আঙ্কেল তবে আমার এখন কিছু কথা বলার আছে।(আমি)
— হুম বলো
— আঙ্কেল আপনি কি করেন?(আমি)
— একটা ছোট্টো কোম্পানীতে জব করি।(আঙ্কেল)
— তাহলে আঙ্কেল আপনার যদি ভালোভাবে সংসার চলে যেতে পারে তাহলে আমার কেন যাবে না।(আমি)
— আরফান এভাবে মাথা গরম কররতে নেই আমি আমার মেয়ের বিয়ে সরকারী চাকুরী ওয়ালা পোলার সাথেই দেবো।(আঙ্কেল)
আমি তো ভাই রেগে আগুন হয়ে যাচ্ছি আস্তে আস্তে
— আঙ্কেল আপনি সরকারি চাকুরী ওয়ালার সাথে বিয়ে দিতে পারেন আমার কোনো আপত্তি নেই কিন্তু একটা কথা বলে দিতে পারি আপনার মেয়েকে আপনি অন্যের টাকা দেখে তাকে বিক্রি করতে চাইছেন। আপনার খুশিটাই তো সব আপনার মেয়ে যে বিয়ের পর কিভাবে থাকবে কতোটা হাসিতে থাকবে কতোটা কষ্টে থাকবে তার কোনো আপনাদের ভ্রুক্ষেপ থাকবে না। আর হ্যাঁ আঙ্কেল আমরা বিয়েটা পালিয়ে গিয়েও করতে পারতাম আপনার মান সম্মানের কথা ভেবে এটা আমরা করিনি।(আমি)
— আরফান তুমি আমাকে পুরোপুরি ভুল বুঝছো।(আঙ্কেল)
— থাক আঙ্কেল নতুন করে সাফাই দেওয়া লাগবে না। সরকারী চাকরি কি আপনার মতো সব আব্বুদের ট্রেন্ড হয়ে গেছে নাকি সরকারি চাকুরি ওয়ালা ছেলে চাই। কেন আমি কি টাকা উপার্জন করিনা, তারা তো টাকা সৎ পথে উপার্জন করে আর আমরা তো ডাকাত তাই না। নিজেকে একবার বিবেচনা করে দেখুন আমি ভুল বলছি না ঠিক বলছি।(আমি)
— আরফান দেখো তুমি কিন্তু এবার সহ্যের সীমার বাইরে চলে যাচ্ছ।(আঙ্কেল)
— আরে বাইরে যাওয়ার কি আছে? আপনার মেয়েকে অতিরিক্ত ভালোবাসি বলেই আপনাকে এতো বোঝানোর ট্রাই করছি। যান বিয়ে দেন আপনার মেয়ের কিন্তু মনে রাখবেন আপনার মেয়েত প্রতিটা বিন্দু বিন্দু চোখের পানীর কারন হয়ে দাঁড়াবেন আপনি, মেয়েটা হয়তো আপনাদের সামনে হাসাহাসি করে চলবে এটা স্বাভাবিক কিন্তু দিনের শেষে এই পোলাটার জন্য চোখের কোনে পানী আসবে তার জন্য দায়ী থাকবেন আপনি।(আমি)
আমি এবার ঐশীর আব্বুর সামনে…
— আঙ্কেল আমি হাত জোড় করছি আপনার মেয়ের জীবনটাকে অন্যের সাথে জড়িয়ে নিজেকে দায়ী করবেন না প্লিজ। আমার যতোটুকু আছে ততটুকু দিয়ে তাকে রানীর মতো করে রাখবো।(আমি)
— আরফান তুমি আমার পাশের বাসার পোলা তাই এতক্ষন তোমার এসব ফালতু কথা শুনছি, আর সহ্য হচ্ছে না।(আঙ্কেল)
— ঠিক আছে।(আমি)
এটা বলে চোখের পানী মুছতে মুছতে নিচে চলে এলাম, নীচে এসেই….
— আম্মু চলো বাসায় যাবো। (আমি)
আম্মু আমাকে এমন ভাবে বলা দেখে…
— কি রে কি হল?(আম্মু)
— কিছু না। বাসায় চলো।(আমি)

এবার ঐশীর আমার কাছে এসে আমার হাত ধরতেই আমি ওর হাত জোর করে ছাড়িয়ে ছিটকে দিলাম।
— আরফান কি কথা হলো আব্বুর সাথে।(ঐশী)
আমি আমার মুখে মিথ্যা হাসি নিয়ে…
— হুম হলো। ঐশী আমি তোমায় বিয়ে করতে চাই না।
এটা শুনে সবাই চমকে গেলো।(আমি)
এটা বলে আম্মুকে নিয়ে আমি বাইরে বেরিয়ে গেলাম। আমার চোখে এখন প্রচুর পানী জমে আছে, কিন্তু বাইরে বের করতে পারছি না।
আমরা বাইরে আসতেই…
— এই আরফান তোর কি হইছে বলতো বিয়ে করতে চাস না কেন? মেয়েটা কতোটা কষ্ট পাবে জানিস। (আম্মু)
আমি কান্নার ছাপ লুকিয়ে হাসি মুখে….
— দূর আম্মু আমার এই বয়স ২২, এখনো অনেক টাইম আছে লাইফটাকে ইনজয় করি এখন বিয়ে করে নিজের লাইফটাকে নষ্ট করতে চাই না।(আমি)

এটা বলার সময় আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে কষ্টে। আম্মুকে যদি এই অপমানের কথাগুলো বলি তাহলে আম্মু সহ্য করতে পারবে না।
আজ বুঝলাম তুমি যতোই ভালোবাসো কোনো মেয়েকে যদি তোমার সরাকারী চাকরি থাকে তাহলে তুমি তাকে পাবে এটা ১০০% কনফ্রাম।
আজ কালের ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে সরকারী চাকুরী ওয়ালা জামাই চাই।
সোজা বাসায় এসে কোনো কথা না বলে কারোর সাথে রুমে গিয়ে একভাবে মাথা নিচু হয়ে বসে রইলাম, জান্নাতও কিছুক্ষণ পর এসে…
— আরফান তোমার কি ব্যাপার বলোতো। (ঐশী)
— এই তুই এখানে কেন? (আমি)
— আমার বুঝি আসা যাবে না।(ঐশী)
— না আসা যাবে না। চল নিজের বাসায় যা আর কোনোদিন আসবি না।(আমি)
— ওকে, আচ্ছা তুমি আমায় কেন বিয়ে করতে চাও না বলবে প্লিজ। (জান্নাত কান্না করে করে)
— করতে চাই না আবার কেন? আমি তোকে বিয়ে করে আমার পুরো জীবনটা কেন নষ্ট করতে যাবো কেন শুনি।
জান্নাত আমার কথা গুলো শুনে থমকে রইলো,
আমারো খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কিচ্ছু করার নেই।(আমি)
— ও বাহ খুব ভালো, তাহলে আমাকে দেওয়া কথা গুলো সেগুলার কি হবে শুনি?(ঐশী)
— সব শেষ। আমাকে ভুলে যা।(আমি)
– আরফান তুমি আমায় তুমি তো আমায় অনেক ভালোবাসো তাই না।(ঐশী)
এটা বলে আমাকে জড়িয়ে ধরতেই…
— নাহ আমি তোকে ভালোবাসি না।(আমি)
এটা বলেই ওকে ছাড়িয়ে দূরে ঠেলে দিলাম।
ঐশী প্রচুর কান্না করছে। অনেক বোঝানোর ট্রাই করছে।
শেষ মেষ আমার পা ধরে…
— আরফান আমি তোমায় অনেক ভালোবাসি আমায় প্লিজ বিয়ে করে নাও, তুমি যা বলবা তেমনই থাকবো প্লিজ।(ঐশী)
আমার এখন এতোটাই কষ্ট হচ্ছে যে আমার মুখ দিয়ে কোনো কথাই বার হচ্ছে না।
আমি এবার ঐশীকে তুলে আমি আমার বুকে জড়িয়ে নিলাম, আমি এবার আমাদের বাইরে যাওয়ার দরজার সামনে ঐশীকে নিয়ে গিয়ে….
— ভালোবাসি না তোকে, ভুলে যা আমাকে।(আমি)
এটা বলে ওকে ছেড়ে দিয়ে দরজা এঁটে দিয়ে খুব কান্না করছি।
ঐশী দরজায় জোরে জোরে ধাক্কা দিয়ে…
— আরফান আমি খুব ভালোবাসি তোমায় না পেলে আমি কিন্তু এ জীবন রাখবো না। প্লিজ আরফান দরজা খুলো। আরফান প্লিজ প্লিজ অভ্র খুলো না প্লিজ।(ঐশী)
এভাবে কিছুক্ষণ করার পর চিৎকার করে…
— আরফান i love u, আমি যদি তোমায় না পাই তাহলে আমি নিজেকে শেষ করে দেবো।(ঐশী)
আমি চিৎকার করে…..
— আমি ভালোবাসি না তোকে।(আমি)
এসব চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পেয়ে আম্মু আমার সামনে এসে….
— ছি আরফান একটা মেয়ে তোকে এতো ভালোবাসে তুই কেমন পোলা হুম একটা মেয়েকে এতো কষ্ট দিচ্ছিস, মনে রাখবি তুই একটা মেয়েত গর্ভেই জন্মেছিস, তোকে জন্ম দিয়েই ভুল করেছি আমি এখন দেখছি। এভাবে একটা মেয়েকে কাঁদাচ্ছিস ছি।(আম্মু)
কথা গুলো শুনে কষ্ট চেপে একটু হেসে…
— জ্বি আম্মু আমি তোমার একটা কুলাঙ্গার পোলা, একটা মেয়েকে কথা দিয়ে কথা রাখতে পারিনি।(আমি)

এটা বলে সোজা রুমে এসে বিছানার উপর উঠে বালিশে মুখ গুঁজতেই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করে দিলাম না চাইলেও চোখ তো আর মানতে চাই না। এখন আমার বালিশটাই বুঝতে পারছে আমি ঐশীকে কতখানি ভালোবাসি আর তার জন্য কতটা আমার কষ্ট হচ্ছে, পুরো বালিশটা এক নিমেষে ভিজে গেলো। আমি এখন একটা জীবন্ত লাশ। সারারাত কেঁদেছি একটুও ঘুমাতে পারিনি ঐশীর জন্য খুব মন খারাপ করছে, ঐশীর ফটো দেখেই সারারাত কেটেছে, যাকে নিয়ে সারারাত স্বপ্ন দেখতাম আজ তার ফটো দেখে সেই স্বপ্ন গুলোকে মুছার চেষ্টা করছি। আল্লাহ তোমায় শুকরিয়া দিতে চাই আমাকে এতো কষ্ট দেওয়ার জন্য। নয়তো বুঝতামই না যে ভালোবাসায় এতো কষ্ট আছে । সকালে উঠে ওয়াশ রুমে আয়নার সামনে দাঁড়াতেই নিজেকে চিনতে পারছি না। যে আরফান কাল ছিলো সেটা আজ আর নেই, কুলাঙ্গার নাঈম দাঁড়িয়ে আছে। নিজেকে খুব নীচ মনে হচ্ছে। এই সেই আরফান সে কাল তার দুটো ভালোবাসার মানুষকে প্রচুর কষ্ট দিয়েছে, প্রথমে আম্মু,নেক্সট ঐশীকে। তবুও কিছু করার নেই চোখ গাল ভালোভাবে মুছে মুখে মিথ্যা হাসির ছলনা নিয়ে বাইরে বার হলাম, জ্বি আমরা ছেলে আমাদের কাঁদতে নেই, আমরা কাঁদলে সমাজ আমাদের দিকে আঙুল তুলে বিভিন্ন রকমের দোষ দেয়। তাই আমাদের কাঁদতে নেই।
হঠাৎ ঐশী আমার সামনে এসে
— আরফান…. কি হয়েছে বলো না।(ঐশী)
— এই তুই যা না প্লিজ, দেখ ভালো লাগছে না।
এটা বলে পাশ কাটিয়ে আমি চলে যাচ্ছি।(আমি)
ঐশী পুরাই এক রাতের মধ্যে কেমন যেন হয়ে গেছো, পুরা মুখ শুকাই গেছে।
এখনও ঐশী আমার পিছন পিছন আসছে।

তো এই 2-3দিন অনেক বেস্থ ছিলাম তাই গল্প দিতে পারি নাই। নেক্সট পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন সবাই আগামীকালকে নেক্সট পর্ব দেওয়া হবে

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

More From Author

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *