রিদি এবার হেসে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে……
রিদি:- নাঈম জানো আমি ভাবতে পারিনি যে তোমায় আমি কখনো এতোটা ভালোবেসে ফেলবো। তুমি প্রচুর আমার সাথে ফ্লাট করতে আমি জানতাম তুমি ফ্লাট করতে আমাকে পটানোর জন্য। কিন্তু তুমিই আমায় বেশি হাসাতে সারাদিনে। খুব ভালো লাগতো তোমার সাথে কাটানো সময় গুলো। খুব ভালোবাসি তোমায় আমি। আর হ্যাঁ অন্যজনের সাথে ফ্লাট করলে তোমার খবর আছে, আর যদি কখনো ছেড়ে যাওয়ার কথা আসে তাই কলমের নিব আমি ভেঙে নিবো বলেই দিচ্ছি।
আমি- এই কলমের নিব মানে?
রিদি এবার হাল্কা হেসে…..
রিদি:- তোমার ভবিষ্যত
ভাইরে আমি পুরাই লজ্জা পেয়ে…..
আমি- মানে?
রিদি:- কিছু না, তোমার পাঠক ভাইয়াদের বলতে বলো তো
আমি- ওকে ওরা কমেন্ট বক্সে লিখে ওদের মতামত জানিয়ে দেবে, এখন তো বলো।
রিদি:- উহু লজ্জা করে যে। তবে গ্যারান্টি বলছি আমায় ছেড়ে গেকে তোমার কলমের নিব ভেঙে সব কালি বের করেই তবে তোমায় ছাড়বো।
আমি- তাই নাকি গো
__কিছুক্ষন পর আমরা বাইরে বেরিয়ে এলাম।
আমরা দুজন বাইরে গেলাম আম্মু আব্বু আমায় দেখে খুব হাসছে। রিদি বাই বলে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো। আর আব্বু আমার দিকে এসে…….
আব্বু- ওই মেয়েটার সাথে কি করছিলি শুনি?
আমি- আম্মুকেই জিজ্ঞাসা করো না, ফাইল সাইন করাচ্ছিলাম তো।
আম্মু এবার লজ্জা পেয়ে রুমে চলে গেলো।
আব্বু- নাঈম তোর মোবাইলটা বের করে ক্যামেরাটা বের কর তো।
আমি হাল্কা হেসে…..
আমি- সেল্ফি নিবা নাকি, তা ভালো বুড়ো বয়সেও এসব তুলা যায় তাহলে আজ বুঝলাম।
আব্বু: এই তুই বের করবি।
আমি- আচ্ছা বের করছি।
আমি এবার মোবাইলের সেল্ফি ক্যামেরা অন করে আব্বুকে দিলাম।
আর আব্বু আমার মাথায় চাঁটি চাঁটি মারতে মারতে……
আব্বু- ওরে হারামজাদা তাহলে তোর চোখে মুখে কপালে লিপস্টিক কেন?
__এটা বলে মোবাইলটা আমায় ধরিয়ে দিলো।।
আরে শালা আমি তো দেখে পুরাই অবাক। ইশ কি লজ্জার ব্যাপার, কি লজ্জা কি লজ্জা
আমি দৌড়ে রুমে এসে মুখটা ধুয়ে নিলাম।
রাতে আম্মু ডিনার করার জন্য ডাকছে, কিন্তু ভাইরে লজ্জায় আমি যেতে পারছিনা। শালা আব্বু আম্মুর সামনে, বাবারে কি লজ্জা কি লজ্জা,,,,,,
আম্মু সোজা আমার রুমে এসে……
আম্মু- তোকে যে এতোক্ষন ধরে ডাকছি কথা কি শুনতে পাসনা নাকি?
আমি- জ্বি জ্বি আম্মু, তোমরা খেয়ে নাও আমি নিয়ে খেয়ে নেবো।
আম্মু- ও মা তা বললে কিভাবে হবে? আমরা খেয়ে নেবো তুই না খেলে। চল বলছি
আমি- উফ আম্মু তুমি যাও না।
আম্মু- তোর কি কোনো প্রব্লেম হচ্ছে নাকি যেতে?
আমি- আম্মু সেরকম কিছুই না। তুমি যাও তো।
__আম্মু এবার রেগে আমার হাত ধরে খাবারের টেবিলের কাছে নিয়ে এলো।
আমি মাথা তুলতে পারছিনা আব্বুর সামনে। আব্বু এবার নরমাল ভাবেই…..
আব্বু- কি ব্যাপার খেতে আসছিলি না কেন?
আমি- না মানে আব্বু, হয়েছেটা কি
আব্বু এবার হেসে…..
আব্বু- সন্ধার জন্য বুঝি লজ্জা পেয়েছিস।
এটা বলেই আমার হাত ধরে….
আব্বু- আরে হয় হয় এই বয়সে ওসব করবিনা তো কখন করবি তবে তার একটা প্রাইভেসি থাকা তো দরকার।
___ভাইরে আব্বুর কথা শুনে আমি পুরাই আশ্চর্য, আব্বু আজ থেকে কতদিন আগে যে নরমাল ভাবে কথা বলেছে তার কোনো খেয়ালই নেই।
আমি মাথা নিচু করেই……
আমি- আমি বুঝতে পারিনি আব্বু।
আম্মু এবার হেসেহেসে…….
আম্মু- তুমি আবার শুরু করলে ছেলেটাকে নিয়ে।
আব্বু এবার আম্মুর দিকে তাকিয়ে…..
আব্বু- এই তোমার কেন সবসময় মনে হয় বলোতো তোমার ছেলেকে আমি বকছি। বাপ বেটার একটা প্রাইভেট জিনিস নেই নাকি সব জায়গায় নাক গলাতে হবে তোমায়।
আম্মু এবার রেগে ডালের ডাবু দেখিয়ে……
আম্মু- এটা দেখেছো। নাক গলাবো না মানে আমার ছেলেকে তুমি কি বলছো আমায় জানতে হবে না।
আব্বু এবার আমতাআমতা করে……..
আব্বু- নাঈম দেখছিস তো লাভ ম্যারেজ করার কি ফল, ট্রেলারটা দেখে নে, তুই করলে তারপর দেখবি পুরো মুভিটা।
আমি হেসেহেসে….
আমি- আচ্ছা আব্বু আম্মু একটা কথা বলি….
দুজনে একসাথে- বল।
আমি- আম্মু তুমি বসো আগে।
আম্মু এবার বসলো আমাদের সামনে।
আমি- লাভ ম্যারেজ করলেই কি ঝগড়া হয়?
আব্বু আম্মু দুজনেই হেসে…..
দুজনে একসাথে- হুম টুকিটাকি হবেই।
আমি- তাহলে তোমরা সারাক্ষন করো কেন?
এটা বলতেই আম্মুর দিকে আব্বু তাকিয়ে আর আব্বুর দিকে আম্মু তাকিয়ে হাল্কা হেসে….
আম্মু- যেখানে ঝগড়া বেশি সেখানেই ভালোবাসা
আমি- ওহ আচ্ছা তারমানে ঝগড়া করলেই ভালোবাসা বাড়ে।
আম্মু এবার হাল্কা লজ্জা পেয়ে…..
আম্মু- এইসব কথা বাদ দে, নে তুই খেয়ে নে,,,,,,,
এটা বলেই আমায় খাবার দিলো।
আমি খাবার খাচ্ছি, এসময়েই আম্মু……
আম্মু- মেয়েটা কে রে?
আমি- কোন মেয়েটা আম্মু?
আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে…..
আম্মু- ওই যে ফাইল সাইন করতে এসেছিলো।
ভাইরে আমি পুরাই লজ্জায় লাল হয়ে গেছি এখন।
মুখ নামিয়ে….
আমি- চুপ করো না।
আম্মু- দেখতে কিন্তু ভারী মিষ্টি। দেখতে হবে তো কার ছেলে চুজ করেছে।
আব্বু আবার মাঝখানে খাবার খেতে খেতেই…..
আব্বু- বুঝলে নাঈমের আম্মু আমাদের ছেলেটার মধ্যে কি দেখলো অতো সুন্দর একটা মেয়ে শেষে এর মতো একটা গাধাকে পছন্দ করলো।
আবারো আম্মু চোখ রাঙিয়ে……
আম্মু- এই তুমি এই কথাটা ছাড়বা। আমার ছেলে তো চাঁদের থেকে কম না। অনেক সুন্দর আমার ছেলে।
__এটা বলেই আমার মাথায় একটা চুমু খেয়ে হাত বুলাতে লাগলো।
সত্যি ভাই আম্মুর মুখ থেকে এই কথাটা শুনলে পুরাই জানটা শান্তি হয়ে যায়। সব আম্মুর কাছে তার ছেলেমেয়েরা চাঁদের থেকে কম না।
আব্বু হেসেহেসে….
আব্বু- হুম জানি তো তারজন্যই আজ পর্যন্ত এতো আগলে রেখেছো। দেখবো দুইদিন পর বৌ আসলে তুমি কতো আগলে রাখতে পারো।
আমি এবার রেগে…..
আমি- উফ তোমরা চুপ করবা প্লিজ
_আমি রাগ দেখাতেই চুপ হয়ে গেলো দুজনেই। পকেটে মোবাইলটা ভাইব্রেট হচ্ছে, কি জানি কে কল দিয়েছে ডান পকেটে আছে তাই আমি….
আমি- আম্মু ফোনটা বের করো তো আমার ডান পকেটে আছে, কে যেন ফোন দিয়েছে?
আমৈ- দাঁড়া।
এটা বলেই আম্মু ফোন বের করলো।
আম্মু এবার অবাক হয়ে…..
আম্মু- এই বাবু লাভ কে রে?
_মরেছে রে, শালা আম্মুর হাতে ফোন পড়ে গেছে, আর রিদির নাম্বারটা লাভ নামে সেভ করা আছে।
আমি- আ আ আ আ আ আ মি মি মি মি কি কি কি ভাবে জানবো।
আম্মু মুচকি হেসে…..
আম্মু- দেখো তোমার বৌমার হবে হয়তো?(আম্মু)
আমি- না না না আম্মু ওটা তোমার বৌমার নাম্বার নয়। আচ্ছা আম্মু আমায় ফোনটা দাও?
আম্মু- উফ দাঁড়াতো বাবু, দাঁড়া রিসিভ করি।
এবার রিসিভ করে আম্মু লাউন্ডস্পিকার দিতেই…….
রিদি: হাই বাবু কি কলে আমাল বাবুতা।
(পাঠক-পাঠকীরা আপনাদের উদ্দেশ্য করে একটা কথা বলি, আপনাদের সবার জন্য একটা মেসেঞ্জার গ্রুপ খোলা হয়েছে, এই গ্রুপে শুধু আমার নতুন কোনো গল্প এর লিংক বের হলে, ওই গ্রুপে লিংক দেওয়া হবে তাহলে আপনাদের জন্য সুবিধা হবে, সো জারা জারা এই গ্রুপে এড হতে চান তারা আমাকে ইনবক্সে নক করুন অথবা কমেন্ট করুন, গ্রুপ নাম: NR Story)
__মরেছে রে। শালা আম্মু আমার দিকে কেমনভাবে যেন তাকিয়ে আছে।
এবার ফোনটা চেপে ধরে আস্তে আস্তে করে…..
————–চলবে না দৌড়াবে————–